পুরো বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। অনেক আশা নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও শেষটা হয়েছে মলিন। শেষ ম্যাচেও পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শনিবার পুনের এমসিএ স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রানের বড় সংগ্রহ পায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। জবাবে মিশেল মার্শের অপরাজিত ১৭৭ রানের তাণ্ডবে ৮ উইকেট ও ৩২ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
৩০৭ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু শুরুতেই উইকেট হারায় অসিরা। তৃতীয় ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার তাসকিন।
১২ রানে ভাঙে অসিদের ওপেনিং জুটি। ১১ বলে ১০ রান করা ট্রাভিস হেডকে বোল্ড করেন তাসকিন। শুরুর সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১২০ রান করেন দুই অসি ব্যাটার ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। জুটি ভাঙেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। মিড অনে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওয়ার্নার। আউট হওয়ার আগে খেলেন ৬১ বলে ৫৩ রানের ইনিংস।
এরপর আর কোনো উইকেট হারায়নি অস্ট্রেলিয়া। স্টিভেন স্মিথকে সঙ্গে নিয়ে ১৭৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন মার্শ। ৬৪ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন স্মিথ। বাকি কাজটুকু করেন মার্শ।
বাংলাদেশি বোলারদের তুলোধুনা করে খেলেন ১৩২ বলে অপরাজিত ১৭৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। ১৭টি চার ও ৯টি ছক্কার সাহায্যে গড়ে তোলেন ইনিংসটি। অসিরাও পায় সহজ জয়।
বাংলাদেশের পক্ষে একটি করে উইকেট নেন তাসকিন ও মুস্তাফিজ।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনে খেলতে থাকেন বাংলাদেশি দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। ১১.২ ওভারে ৭৬ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে বাংলাদেশ।
দ্বাদশ ওভারের দ্বিতীয় বলে শিন অ্যাবোটের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম। আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে ছয়টি চারে ৩৬ রান করেন তামিম। তার সঙ্গী লিটনও বেশিক্ষণ টিকলেন না।
জাম্পার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন টাইগার এই ওপেনার। ৪৫ বলে পাঁচ চারে ৩৬ রান করেন লিটন।
লিটন ফেরার পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক শান্ত এবং তাওহিদ হৃদয়। সাকিব দলে না থাকায় এদিন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পান হৃদয়। শান্তর সঙ্গে তার জুটিও অর্ধশতক পেরিয়ে যায়।
তবে দুজনের দোষেই ভাঙল ৬৬ বল স্থায়ী ৬৩ রানের এই জুটি। অহেতুক এক রান আউটে কাঁটা পড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫ রানের জন্য অর্ধশতক হল না তার।
শান্ত ফিরলেও দলের রানের গতি কমতে দেননি পাঁচে নামা মাহমুদউল্লাহ। ৩৩তম ওভারে ২০০ পেরোয় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ১০০ স্পর্শ করেছিল ১৬ ওভারে। তবে হৃদয়ের তাড়াহুড়োয় রান আউটে কাঁটা পড়েন দুর্দান্ত খেলতে থাকা মাহমুদউল্লাহ। ২৮ বলে ৩২ রান করে থেমেছেন তিনি। এরপর হৃদয়ের সঙ্গে জুটি গড়েন মুশফিক।
এর মাঝেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৬১ বলে হাফ সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন হৃদয়।
এরপরই জাম্পাকে বড় শট খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ বলে ২১ রান।
আজ বেশ আগ্রাসী ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। তবে শেষ মুহূর্তে থামলেন হৃদয়। স্টয়নিসের ফুলটসে ছক্কা মারতে গিয়ে লাবুশেনেকে ক্যাচ দেন তিনি। ৭৯ বলে ৭৪ রান করে থামেন হৃদয়।
এরপর মিরাজের ব্যাটে তিনশ’ পেরোয় বাংলাদেশ। দলীয় ৩০৩ রানে ২০ বলে ২৯ রান করে আউট হন মিরাজ। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ পায় ৩০৬ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন শন অ্যাবট ও অ্যাডাম জ্যাম্পা। ১ উইকেট নেন মার্কাস স্টয়নিস।