সাভার ও আশুলিয়ায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ-শ্রমিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।
আজ সোমবার টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়ার জামগড়া ও ছয়তলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু কারখানা ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকেরা কাজে যোগদানের পরপরই কারখানার ভেতরে আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে দিলে শ্রমিকেরা বের হয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
সাভার চামড়া শিল্পনগরী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক রাসেল হোসেন মোল্লা বলেন, ‘বেতন ভাতার দাবিতে কয়েক দিন ধরেই হেমায়েতপুর পদ্মার মোড়ের দীপ্তা অ্যাপারেলসের শ্রমিকেরা আন্দোলন করে আসছিল। শ্রমিক আন্দোলনের কারণে কয়েক দিন আগে কর্তৃপক্ষ কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে দেয়। আজ সকাল আটটার দিকে ওই কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক আশপাশের বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে হামলা চালিয়ে শ্রমিকদের বের করে আনার চেষ্টা করে। এ সময় স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ, ব্যাবিলন গ্রুপ ও একেএইচ গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবস্থা বেগতিক দেখে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ ও ব্যাবিলন গ্রুপ কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানাও ছুটি ঘোষণা করে দেয়। শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বের হয়ে হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করে। সেখানে পুলিশ বাধা দিলে শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়।’
সকাল ১০টার দিকে, এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়ার ঘটনা ঘটছিল।
অন্যদিকে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় একই দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
শিল্প পুলিশ, শ্রমিক আন্দোলনের কারণে আজ সোমবার সকালে জামগড়া এলাকার কয়েকটি করখানা ছুটি ঘোষণা করে। এ সব কারখানার শত-শত শ্রমিক কারখানা থেকে বের হয়ে বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে শ্রমিকের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। শ্রমিকদের মধ্যে আরও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
শ্রমিকেরা বিভিন্ন অলিতে গলিতে অবস্থান নিয়ে পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়।
শ্রমিক অসন্তোষের মুখে জামগড়া এলাকার সেতারা, এনভয়, দি রোজ, ভার্চুয়াল, এম ডিজাইন, উইন্ডি, পাইওনিয়ারসহ ছয়তলা এলাকার প্রায় সকল পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এর জের হিসেবে বেশ কিছু কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করে যাচ্ছে।’