রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :২৮ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:০২ : অপরাহ্ণ
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গপথ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলের উদ্বোধন ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে টোল দিয়ে গাড়িতে করে টানেলের মাধ্যমে কর্ণফুলী পাড়ি দেন সরকারপ্রধান।
এরপর আনোয়ারা প্রান্তে কাফকো কলোনিসংলগ্ন কেইপিজেড মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এ টানেলটি আগামীকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
মাটির প্রায় ১৪০ ফুট গভীরে নির্মিত ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেলটি গাড়িতে পাড়ি দিতে সময় লাগবে তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিট।
টানেলে দুটি টিউব রয়েছে। এই টিউবগুলো কর্ণফুলী নদীর তলদেশ থেকে ১০৫ ফুট গভীরে নির্মাণ করা হয়েছে।
এই টানেল চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে।
জানা গেছে, ১২ ক্যাটাগরির যানবাহন চলতে পারবে বঙ্গবন্ধু টানেলে। যার টোল হারও চূড়ান্ত করেছে সেতু বিভাগ। টোলের অঙ্ক সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে চলাচল করতে পারবে না মোটরসাইকেল বা তিন চাকার যান।
টানেলে টোল পরিশোধের জন্য ১৪টি বক্স বসানো হয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে। সেতু বিভাগের পূর্বাভাস অনুসারে, চালুর পর প্রথম বছরে প্রতিদিন এই টানেল পার হবে ১৭ হাজার ৩৭৪টি গাড়ি। যার মধ্যে ৩ হাজার ২১৮টি ভারী যান। ২০২৫ সালে প্রতিদিন পার হওয়া যানবাহনের সংখ্যা দাঁড়াবে ২৮ হাজার ৩০৫টিতে।
এই টানেল নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস অর্থনীতি ও যোগাযোগ খাতে। কেননা, এতে করে নদীর দক্ষিণাংশে শিল্পায়ন, রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের দূরত্ব কমে আসা, পর্যটনখাতের বিকাশ, গভীর সমুদ্র বন্দর কেন্দ্রিক পণ্য আনা নেয়া, এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কসহ নানা ক্ষেত্রে বড় এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে। তাই, এটাকে বলা হচ্ছে, দেশের অর্থনীতি ও যোগাযোগখাতের নতুন গেম চেঞ্জার।
বঙ্গবন্ধু টানেলের মেয়াদ হবে অন্তত একশ বছর। যা প্রথম পাঁচবছর রক্ষণাবেক্ষণ করবে চীনা প্রতিষ্ঠান। এরপর প্রশিক্ষণ আর রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে তার পরিচালনার দায়িত্ব নেবে বাংলাদেশ। এই টানেলের কারণে জিডিপি হওয়ার কথা প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ।
২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর টানেল নির্মাণে প্রকল্পটি তার সরকারের অনুমোদন পায়। পরের বছরের ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। সাত বছর পর বাস্তবে রূপ নিয়েছে টানেল।