রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৪ অক্টোবর, ২০২৩ ৫:৫৮ : অপরাহ্ণ
২০০১ সালে দেশের সম্পদ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব আমার কাছেও এসেছিল। বলেছিলাম, আমি শেখ মুজিবের মেয়ে দেশের স্বার্থ কখনো বেচি না। ক্ষমতার লোভ আমার নেই। খালেদা জিয়া এসে গ্যাসতো দিতেই পারেনি উল্টো বাংলাদেশকে পাঁচ পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছে। আর বিদেশ থেকে টাকা এসেছিল এতিমখানার জন্য, এতিম একটা টাকাও পায়নি, সব টাকা নিজে মেরে দিয়েছে।’
আজ শনিবার রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকার কাওলায় সিভিল অ্যাভিয়েশন মাঠে আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এ সভার আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগই নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগই নির্বাচনী ব্যবস্থার উন্নতি করেছে। ১৯৯৬ সালে ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মাত্র দেড় মাসে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল। জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার করেছি। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, তারা দেশের উন্নতি সহ্য করে না। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে জিয়া বা খালেদা জিয়ার কোনো অবদান নেই। বরং তারা ভোট চুরি করে ক্ষমতা দখল করেছে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে যে দেশের উন্নতি হয়, এটা আজ আমরা প্রমাণ করেছি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘’৭৫ এর পর ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল- জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ খালেদা জিয়া থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, এই ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা দেশের জন্য কি করেছে? মানুষের জন্য কি করেছে? মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কী করেছে? সেটা একবার চিন্তা করে দেখবেন। অনেকে বড় বড় কথা বলেছে, দেশের মানুষের জন্য তারা কী করেছে?’
খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপির অনশন কর্মসূচির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দেখি খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিএনপি নেতারা অনশন করে। আমি জিজ্ঞেস করি তারা কয়টা থেকে অনশন শুরু করেছিল? বাসায় কী দিয়ে নাশতা করে এসেছে? বাড়িতে কী দিয়ে ভাত খাবে। কয় ঘণ্টার অনশন? নাটক করারও একটা সীমা থাকে। এই নাটকই করে যাচ্ছে।’
বিএনপি নেতাদের কাছে প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার (তারেক রহমান) মা অসুস্থ। আপনারা অনশন করেন। তাহলে ছেলে কেন মাকে দেখতে আসে না। এটা কেমন ছেলে, সেটা আমার প্রশ্ন। মা অসুস্থ মরে মরে, সে নাকি যখন-তখন মরে যাবে। হ্যাঁ বয়সও হয়েছে, অসুস্থতো বটে। মাকে দেখতে আসে না কেন? আমিতো বলব মাকে দেখতে আসুক।’
আরও পড়ুন: তলে তলে আসলে কিছুই হয়নি: মির্জা ফখরুল
বিএনপির দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অর্থপাচারের কারণে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সময় মুচলেকা দিয়ে খালেদা জিয়ার ছেলে বিদেশে পালিয়ে যায়। যে নাকি জীবনে আর রাজনীতি করবে না। কিন্তু যে টাকা সে পাচার করেছে সেই মামলায় এফবিআই সাক্ষ্য দিয়ে গিয়েছিল। সে ওই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তাদের ব্যবসা ছিল অস্ত্র চোরাকারবার, অর্থ পাচার।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) নাকি আমাদের উৎখাত করে দেবে। সময় দিয়েছিল ১০ ডিসেম্বর। বিজয়ের মাসে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে? যে সরকার জনগণের রায় নিয়ে বারবার নির্বাচিত হয়েছে। দেশের মানুষ এটা মেনে নিতে পারে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া কখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না। খালেদা জিয়া পাকিস্তানের ধারাবাহিকতা নিয়ে চলতে চেয়েছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীকে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে বসিয়েছিল। আর আল বদর, রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, যারা এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে, মা বোনকে ধরে নিয়ে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে দিয়েছে, তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল। জিয়াও বসিয়েছিল, এরশাদও, খালেদা জিয়াও। কাজেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে এদের কোনো অবদান নেই।’