রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ৩:২৪ : অপরাহ্ণ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘আমরা কাপুরুষ নই যে সরকারের সঙ্গে আঁতাত করবো।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ( ইসি) এখনও নৈতিকতা বিবর্জিত হয়নি। ইসি এতোটা কাওয়ার্ড (কাপুরুষ) নয়। বরং আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা জানতে চাই। সেটা পারলে আমরা ঋদ্ধ হব।’
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অংশীজনদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : প্রত্যাশা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও অন্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অভিজ্ঞতা ও মতামত জানতে আজ বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসে নির্বাচন কমিশন।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নীতি-নৈতিকতা থেকে আমরা এতটুকু বিচ্যুত হইনি যে আরপিওতে (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধ) নিজেদের ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছি। এটা মোটেই নয়। অনেকেই এখন টকশোতে বলেন, আরপিও সংশোধন করে ইসির ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরকম একটা অপপ্রচার করা হচ্ছে।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন আসলে সহজ নয়। আমরা কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছি। সংকট সমাধান করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। তারা যদি পরিস্থিতি অনুকূল করে দেয়, ইসির কাজ সহজ হবে। পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার প্রয়োজন রয়েছে।’
হাবীবুল আউয়াল বলেন, ‘বারবার বলেছি, রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতা হোক। চায়ের টেবিলে বসেন। দেশীয় পদ্ধতিতেই সমাধান হতে হবে। কিন্তু নাগরিক সমাজকে সেভাবে সক্রিয় দেখছি না।’
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অংশীজনদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের যাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি তারা কেউ রাজনীতিতে যুক্ত নন। আপনারা ইনটেলিকচুয়াল (বুদ্ধিবৃত্তিক)। সে কারণে নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা ও আপনাদের অভিজ্ঞতা, মতামত পেয়ে আমরা ঋদ্ধ হতে চাই। আপনারা একাডেমিক আলোচনা করলে আমাদের জন্য বুঝতে সুবিধা হবে। আমরা কিছু দিক নির্দেশনা পেতে পারি।’
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো দ্বিধা-বিভক্ত। এসব বিষয়ে না ভেবে আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। রাজনৈতিক দল, ভোটার, গণমাধ্যম ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা সবাই তাকিয়ে আছেন। কূটনৈতিক মহলও ব্যাপক আগ্রহী। নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর।’
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অংশীজনদের মধ্যে ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. হুমায়ূন কবীর, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
এছাড়া আলোচনায় আরও অংশ নেন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক (চিফ নিউজ এডিটর) আশিষ সৈকত, সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল, সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাস গুপ্ত, নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ (বার্তা প্রধান) দীপ আজাদ, সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ জুবায়ের, আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ আশিক রহমান, মাছরাঙা টেলিভিশনের হেড অব নিউজ (বার্তা প্রধান) রেজোয়ানুল হক রাজা, আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার, প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক সারফুদ্দিন আহমেদ, জিটিভির হেড অব নিউজ (বার্তা প্রধান) ইকবাল করিম নিশান, এখন টিভির সম্পাদকীয় প্রধান তুষার আব্দুল্লাহ, যুগান্তরের সিনিয়র সাংবাদিক ও কলাম লেখক মাহবুব কামাল, মাইটিভির হেড অব নিউজ (বার্তা প্রধান) শেখ নাজমুল হক সৈকত প্রমুখ।