রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩১ জুলাই, ২০২৩ ৫:৫৩ : অপরাহ্ণ
গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের দুপুরে খাবারের বিষয় নিয়ে উল্টো প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে গিয়ে কেন খেলেন।’
আজ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ প্রশ্ন তুলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘উনি (গয়েশ্বর) তো রুই মাছ দিয়ে ভালো করেই খাইছেন। উনি কেন খাইলেন এটা জিজ্ঞেস করেন। এতো ক্ষুধা রাজনীতিক নেতার? কীসের রাজনীতিক? তিন দিনও খাইনি আমরা একসাথে।’
গোয়েন্দা প্রধানের দপ্তরে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দেয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা কি রাজনৈতিক লোকেরা করছে? আরে গোয়েন্দার কাজেই তো। গোয়েন্দা গোয়েন্দাই। সে তো তথ্য নিয়ে বের করার জন্য বসে আছে।’
আরও পড়ুন: আমানের জন্য হাসপাতালে খাবার পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমানরে (আমান উল্লাহ আমান) সৌজন্য, একজন রাজনৈতিক কর্মী তার কাছে নেত্রী কিছু ফল পাঠিয়েছেন, এটি পাঠাতেই পারে। সে একটু অসুস্থ হইছেন ফল পাঠানো নিয়ম, রাজনীতিতে সৌজন্যতা তো বিদায় নেবে না।’
উল্লেখ্য, গেল শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থানের কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপি। পুরান ঢাকার ধোলাইখালে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সংঘর্ষে আহত অবস্থায় গয়েশ্বরকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। চার ঘণ্টা পর তাকে নয়াপল্টনে দিয়ে আসে পুলিশ। এর মধ্যেই ডিবি কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন-অর রশীদের সঙ্গে গয়েশ্বরের মধ্যাহ্ন ভোজের একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: গয়েশ্বরকে বেধড়ক পেটালো পুলিশ
এদিকে কর্মসূচি থেকে উঠিয়ে নেয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আপ্যায়িত হওয়ার ছবি-ভিডিও প্রকাশকে ‘নোংরা নাটক’, ‘নিম্ন মানের মশকরা’ আখ্যায়িত করে রোববার ক্ষোভ ঝাড়েন গয়েশ্বর।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘যারা এ কাজটি করেছে এটি অত্যন্ত নিম্ন রুচির পরিচায়ক। এক ধরনের তামাশাপূর্ণ নাটক। এতে কি সরকার প্রমাণ করতে চায় যে, আমরা হা-ভাতে? ভিক্ষা করে খাই? গ্রামের ভাষায় বলা হয়, খাইয়ে খোটা দেওয়া। ডিবি অফিসে আমার সঙ্গে যা করা হলো তা ওই রকমই। আমার বাড়িতে তো বিভিন্ন সময় অনেক লোক খায়। এটা আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের। কিন্তু এই খাবারের ছবি উঠিয়ে কি আমি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবো? এটা কি আমার জন্য ভালো হবে?’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘ডিবি কার্যালয়ে তার জন্য যে খাবারের আয়োজন করা হয়, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযোগী ছিল না। এ ছাড়া এ নিয়ে তার সন্দেহও ছিল। যে কারণে তিনি আর ওই খাবার গ্রহণ করেননি। ডিবিপ্রধানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এবং সৌজন্যতা রক্ষায় হারুন অর রশীদের জন্য বাসা থেকে নিয়ে আসা খাবার থেকে ভাতসহ হালকা সবজি ও রুই মাছের একটি টুকরা গ্রহণ করি আমি।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ডিবিপ্রধান আমাকে অনুরোধ করেছেন, রুই মাছটি তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। আর যেহেতু ডিবিপ্রধান নিজেই খাবারটি খাচ্ছেন, তখন আমার মনে হলো-এটা যদি গ্রহণ করি, তাহলে সমস্যা হবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘সরকারের কোনো প্রলোভন আমাকে কিনতে পারবে না। সরকারের কাছে এত টাকা নেই যে, আমাকে কিনতে পারে। সরকার গ্রেপ্তার করতে পারে, এমনকি প্রাণও নিতে পারে-এই শক্তি সরকারের রয়েছে। কিন্তু আমাকে কিনতে পারবে না।’