কম্বোডিয়ায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র গত রোববার ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের তিন দিনের মাথায় দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন হুন সেন। তিনি টানা ৩৮ বছর ধরে কম্বোডিয়ায় ক্ষমতায় আছেন।
আগামী সপ্তাহের মধ্যেই হুন সেন তার বড় ছেলে রয়েল কম্বোডিয়ান সেনাবাহিনীর সাবেক কমান্ডার হুন ম্যানেটের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে জানিয়েছেন।
হুন সেন জানিয়েছেন, তার ছেলেকে ১০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হবে। আর এ সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বিশেষ সম্প্রচারে তিনি বলেছেন, তার পদে থাকা দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
তার দল কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) এক প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে ১২৫ আসনের মধ্যে ১২০টি আসনে জয়লাভ করার তিন দিন পর এ অপ্রত্যাশিত ঘোষণা এলো। যদিও ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য ৪৫ বছর বয়সি হুন ম্যানেটকে দীর্ঘদিন ধরেই প্রস্তুত করা হচ্ছিল।
গত ২৩ জুলাই নির্বাচনের প্রচারেও হুন ম্যানেট অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। প্রায়শই তার বাবার পাশেই তাকে দেখা যেত।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, টানা চার দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা ৭০ বছর বয়সি হুন সেন ক্রমশ কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছিলেন। সবশেষ নির্বাচনেও তার দলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এ ছাড়া দেশটির একমাত্র সত্যিকার বিরোধী দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ব্যালটে বাকি ১৭টি দলই ছিল ছোট বা নতুন বা সিপিপির জোটবদ্ধ।
এরই মধ্যে কম্বোডিয়ার সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি অভিযোগ এনে দেশটির কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: কম্বোডিয়ায় একতরফা নির্বাচন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র
দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের মতে, নির্বাচনে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে কম্বোডিয়ার মানুষের মত ও পছন্দকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
তবে হুন সেনের পদত্যাগের ঘটনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।