প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের গুলশানের বাসায় নৈশভোজে অংশ নিয়েছেন মার্কিন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আয়োজিত এই নৈশভোজে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক নিরাপত্তা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস অংশ নেন।
এছাড়া আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান এবং মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ ছিলেন।
বৈঠক শেষে সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিয়মিত সফরের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসেছে। নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
নির্বাচন বিষয়ে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা বলেছে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন যাতে হয়। আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। আমরা আশা করি নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।’
নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কেমন হবে, সেটা নিয়ে কী কথা হয়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ‘না, উনারা তা বলেন নি। তারা শুধু নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন। তারা একটাই কথা বলেন তা হলো-সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। এই হলো তাদের কথা। এর বাইরে তারা কিন্তু নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলেননি।’
মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ভিসা নীতির ব্যাপারে উনারা বলেছেন বারবার একই কথা, যে আমরা ভিসা নীতি করেছি এটা কোনো দলকে, বিশেষ কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করে করিনি। আমরা এটা মনে করে করেছি যে, এই ভিসা নীতির কারণে বাংলাদেশের নির্বাচনটা আরও ভালো হবে। এই কথাটা তারা পাবলিকলি বলেছে।’
প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ‘উজরা জেয়া বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সেটাকে সহায়তা করতেই তাদের ভিসা নীতি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র
র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা? জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘র্যাবের নিষেধাজ্ঞা তো একটি চলমান প্রক্রিয়া, অলরেডি শুরু হয়ে গেছে। আপনারা জানেন, ওদের সিস্টেম আছে, ওদের আইন অনুযায়ী আবেদন করতে হয়। তারপর তাদের সিস্টেমে তাদের স্ট্যাডি হয়। আমরা অলরেডি আইনজীবী, যেটা নিয়োগ হয়েছে। আমরা উত্তর দিয়েছি। সেটার একটা প্রক্রিয়া আছে। নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া আছে, সেটা আমরা শুরু করে দিয়েছি।’
গাজীপুরে শ্রমিক নেতা হত্যার বিষয়ে মার্কিন প্রতিনিধি দল জানতে চেয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ঘটনাটি দুই পক্ষের মধ্যে হয়েছে। সরকার আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘নিয়মিত সফরের অংশ হিসেবে মার্কিন প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, বিদ্যমান আইন এবং সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার হবে। তখন মন্ত্রিসভা ছোট হবে না বড় হবে সেটি তিনিই নির্ধারণ করবেন।’
