রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৭ জুন, ২০২৩ ১১:০৭ : পূর্বাহ্ণ
পবিত্র হজ আজ। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর আরাফার ময়দান। বড়-ছোট, ধনী-গরিব, সাদা-কালো কোনো ভেদাভেদ নেই আজ।
পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় শুধু দুই খণ্ড সাদা কাপড় শরীরে জড়িয়ে ৪৬ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা একত্রিত হয়েছেন আরাফার ময়দানে।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হলো সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এই ময়দানেই অবস্থান করা। চার বর্গমাইল আয়তনের এই বিশাল সমতল মাঠের দক্ষিণে মক্কা, উত্তরে সাদ পাহাড়।
করোনা মহামারীর কারণে গেলো তিন বছর নানা নিষেধাজ্ঞা ও বিধি-নিষেধের মধ্যে দিয়ে পালিত হয়েছে পবিত্র হজ। তবে চলতি বছর সকন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় এ বছরই প্রথমবারের মতো পূর্ণ সক্ষমতায় ফিরেছে হজের আনুষ্ঠানিকতা।
সৌদি আরবের পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার বিশ্বের প্রায় ২৩ লাখ লোক হজ পালন করছেন।
ইতিমধ্যে হাজিদের মুখে ধ্বনিত হচ্ছে-‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ানিনমাতা লাকা ওয়ালমুল্ক লা শারিকা লাক’ (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো অংশীদার নেই। আমি হাজির। সব প্রশংসা ও অনুগ্রহ শুধুই তোমার। সব রাজত্ব তোমার)
দুপুরে মসজিদে নিমরায় হজের খুতবার মাধ্যমে শুরু হবে মূল আনুষ্ঠানিকতা। উপস্থিত হাজিদের উদ্দেশে মসজিদে নামিরা থেকে খুতবা পড়বেন শায়খ ইউসুফ বিন মুহাম্মদ।
হাজিরা আরাফাতের ময়দানে জোহর ও আসর নামাজ পড়বেন। এরপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া-মোনাজাতে মগ্ন থাকবেন। সূর্যাস্তের পর সবাই মুজদালিফার উদ্দেশে গমন করবেন। সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ পড়ে রাত কাটাবেন। মুজদালিফা থেকে তিন জামারার জন্য তারা পাথর সংগ্রহ করবেন।
পরদিন মিনায় বড় জামারায় গিয়ে পাথর ছুড়বেন। এরপর কোরবানি দিয়ে মাথার চুল ছোট বা মুণ্ডন করবেন। তখন ইহরামের কাপড় বদলে স্বাভাবিক পোশাক পরে মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন।
কাবার সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সায়ি (সাতবার দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন।
মিনা থেকে তিন দিন (বড়, মধ্যম, ছোট) ২১টি করে ৬৩টিসহ মোট ৭০টি পাথর জামারায় নিক্ষেপ করবেন। এরপর মক্কায় বিদায়ি তাওয়াফ করে হজের সব কাজ শেষ করবেন।
গতকাল রোববার মক্কায় তাওয়াফ আল কুদুমে অংশ নেয়ার পর, মিনায় সমবেত হন হাজিরা। সোমবার সারাদিন এখানেই বিভিন্ন তাবূতে অবস্থান করেন তারা। আগামীকাল সৌদি আরবে পালিত হবে ঈদুল আযহা।
সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, করোনার পর এবারই প্রথম বিশ্বের ১৬০টির বেশি দেশ থেকে ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ১৮৮ হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছান। আর সৌদি আরবের ভেতর থেকেও বিপুলসংখ্যক লোক হজ করছেন।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজ পালন করতে এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন সৌদি আরব গেছেন। গত ২১ মে থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ৩২৫টি ফ্লাইটে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ২৬ হজযাত্রী মক্কা ও মদিনায় মারা গেছেন। বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট আগামী ২ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।