শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা খেলা

টেস্টে প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানকে হারালো বাংলাদেশ



রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৭ জুন, ২০২৩ ১২:৩৩ : অপরাহ্ণ

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সফরকারীদের একদিন হাতে রেখে ৫৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে লিটন দাসের দল। এর আগে ২০১৯ সালে দু’দলের প্রথম দেখায় জয় তুলে নিয়েছিল আফগানরা।

চার বছর পর ঢাকার মিরপুরে ব্যাটে-বলের দাপটে আফগানদের উড়িয়ে দিয়ে পুরোনো প্রতিশোধ নিয়েছে বাংলাদেশ।

আজ শনিবারএকমাত্র টেস্টের চতুর্থ দিন আফগানিস্তানকে ৫৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টেস্টে রানের হিসেবে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয়। রানের হিসেবে আগের সর্বোচ্চ জয়টি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৬ রানের। সেটি ছিল ২০০৫ সালে।

শুধু তাই নয়, এটিই টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। ১৪৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসে রানের দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানের জয়টি ইংল্যান্ডের, ৬৭৫ রানের। সেটাও ছিল ১৯২৮ সালে। এবার সেই তালিকায় তৃতীয়তে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ।

একই সঙ্গে মেটানো হলো পুরোনো প্রতিশোধ। এই ফরম্যাটে প্রথম দেখায় আফগানিস্তানের কাছে ২২৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ৪ বছর পর এবার সেই প্রতিরোধও ভালোভাবেই নিল লিটন দাসের দল।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের সামনে সমীকরণটা ছিল সহজ। জিততে হলো নিতে হতো আফগানিস্তানের ৮ উইকেট।

এই লক্ষ্যে মাঠে নেমে দিনের শুরুতেই সাফল্য পেয়ে যায় বাংলাদেশ। দিনের তৃতীয় ওভারেই আগের দিন উইকেটে থিতু হয়ে নাসির জামালকে থামান ইবাদত হোসেন। উইকেটে পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৬ রানে থামেন জামাল।

এরপর আফসার জাজাইকে ফেরান শরিফুল। বাংলাদেশি পেসারের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে খোঁচা মেরে বিপদে পড়েন জাজাই। মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাত্র ৬ রানে। শাহিদির কনকাশনে নামা বাহির শাহের প্রতিরোধও ভাঙেন শরিফুল। অভিষিক্ত বাহির শাহকে থামান ৭ রানে।

তবে বাকিরা ফিরলেও বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান রহমত শাহ। আগের দিন থিতু হয়ে যাওয়া রহমত আজও ছিলেন সাবলীল। শেষ পর্যন্ত আক্রমণে এসে রহমতের উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ।

তাসকিনের করা অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট অফ লেংথ ডেলিভারি মোকাবিলায় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রহমত। ৭৩ বল খেলে ৩০ রানে ভাঙে তার প্রতিরোধ। উইকেটে নতুন আসা করিম জানাতও পারলেন না থিতু হতে। তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরের পিচ করা বলে এলোমেলো হয়ে যায় তাঁর স্টাম্প।

এরপর শুধু জয়ের অপেক্ষা। মাঝে লাঞ্চ বিরতিতে অপেক্ষা বাড়তে পারত বাংলাদেশের। কিন্তু সেই অপেক্ষায় ফেললেন না তাসকিন। দ্রুত শেষ উইকেটগুলো নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের পথ নিশ্চিত করেন।

তবে শেষ দিকে তিনি পেতে পারতেন প্রথমবার পাঁচ উইকেটে স্বাদ। কিন্তু দুদবার আউট হয়েও হলেন না জাহির খান। একবার বাঁচলেন রিভিউতে, আরেকবার বাঁচলেন নো বলে। পরে অবশ্য তাসকিনের বলেই আহত হয়ে ফেরেন সাজঘরে।

বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। ২৮ রান খরচায় শরিফুল নেন তিনটি উইকেট। ২২ রানে ইবাদতের শিকার একটি।

এর আগে এর আগে প্রথম ইনিংসে শান্তর সেঞ্চুরিতে ৩৮২ রান করেছিল বাংলাদেশ। ওই ইনিংসে শান্ত একাই করেছিলেন ১৪৬ রান।

জবাবে প্রথম ইনিংসে নেমে ১৪৬ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। তাতে ২৩৬ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিল বাংলাদেশ। লিডসহ বাংলাদেশের পুঁজি দাঁড়ায় ৬৬১। যা তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তান থেমে গেল ১১৫ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৮৬ ওভারে ৩৮২

আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস: ৩৯ ওভারে ১৪৬

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ৮০ ওভারে ৪২৫/৪ ডিক্লেয়ার (জয় ১৭, শান্ত ১২৪, জাকির ৭১, মুমিনুল ১২১*, লিটন ৬৬*, মুশফিক ৮ ; ইয়ামিন ১৩-১-৬১-০, মাসুদ ১২.৫-১-৮৩-০, হামজা ১৬.১-০-৯০-১, করিম ৮-০-৪৮-০, জাহির ২৩-০-১১২-২, শাহিদি ৩-০-১৯-০)।

আফগানিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস: ৩৩ ওভারে ১১৫/৯ (জাদরান ০, মালিক ৫, রহমত ৩০, শাহিদি ১৩, জামাল ৬, জাজাই ৬, বাহির ৭, জানাত ১৮, হামজা ৫, ইয়ামিন ১, নিজাত ৪*, জাহির ৪ ; শরিফুল ১০-১-২৮-৩ ,তাসকিন ৯-২-৩৭-৪,তাইজুল ৫-২-২৯-০ , মিরাজ ৭-২-২২-১)।

ফল: ৫৪৬ রানে জয়ী বাংলাদেশ।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর