রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১৩ মে, ২০২৩ ৬:১৫ : অপরাহ্ণ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ ভয়ংকর সেই সিডরের মতোই শক্তিশালী বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই সংস্থাটি জানিয়েছে, উপকূলে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মোখা গতি সঞ্চার করতে থাকবে। প্রায় সিডরের সমতুল্য গতিবেগ নিয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে মোখা।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আগামীকাল রোববার বিকেল ৩টার মধ্যে ‘মোখা’ কক্সবাজার উপকূলে আছড়ে পড়বে। শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ে সেন্টমার্টিন, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী দ্বীপের মানুষ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের বড় একটি অংশ সমুদ্রে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সুপার সাইক্লোন না বললেও আমেরিকার নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের পূর্বাভাস মতে, মোখার গতি ঘণ্টায় ২২১ কিলোমিটার হবে।
সামুদ্রিক ঝড়গুলোর শক্তির বিচারে সর্বোচ্চ ধাপে রয়েছে ‘সুপার সাইক্লোন’। যখন কোনো ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার ছাড়ায়, তখনই তাকে ‘সুপার সাইক্লোন’ বলা হয়। ‘মোখা’ সুপার সাইক্লোন না হলেও এর ধ্বংস ক্ষমতা কম হবে-এমন ভাবার কোনো সুযোগ নেই বলে সতর্ক করছেন আবহাওয়াবিদরা।
ঘূর্ণিঝড় মোখা ক্রমশ উপকুলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকায় এবং এর তীব্রতা বাড়তে থাকায় ইতোমধ্যে কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং কাছাকাছি দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট বেশি উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক মো. আসাদুর রহমান বলেন, ‘ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিডরের মতোই শক্তিশালী মোখা। তবে সিডর দেশের মাঝ বরাবর দিয়ে গিয়েছিল। আর মোখা পাশ দিয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ঝুঁকিতে সেন্টমার্টিন, বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক
এই আবহাওয়াবিদ জানান, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, উখিয়া অঞ্চলে মোখার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে। এটি যখন তীরে আছড়ে পড়বে তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১৬০ কিলোমিটারের বেশি। এর প্রভাবে যে বৃষ্টি হবে, তাতে পাহাড় ধসের শঙ্কা আছে। একটানা আট ঘণ্টার বেশি প্রবল বৃষ্টি হলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা থাকে। প্রবল বৃষ্টি হতে পারে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে। সিলেটেও প্রভাব থাকবে। তবে ঢাকায় কম হবে।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। ঝড়টি ভূমিতে আছড়ে পড়ার সময় প্রথম এক মিনিটে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার, দমকা হাওয়ার বেগ উঠছিল ঘণ্টায় ৩০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। সিডরের প্রভাবে উপকূলে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের নাম কেন ‘মোখা’