রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৯ মে, ২০২৩ ৮:০৩ : অপরাহ্ণ
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার পর দেশটিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
এ ঘটনায় দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে চারজনের বেশি জমায়েত।
বিক্ষোভকারীরা লাহোরের ক্যান্টনমেন্টে বেষ্টনী ভেঙে এক সেনা কর্মকর্তার বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। একটি ভিডিও টুইটারে দেখা গেছে, একদল লোক মুখ আংশিক ঢাকা অবস্থায় লাঠি হাতে সেনা কর্মকর্তার গেটে আঘাত করছে।
এর আগে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স।
গ্রেপ্তার করার পর ইমরানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে রাখা হয়েছে নাকি অন্য কোথাও নেওয়া হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
আইজি আকবর নাসির খানের বরাত দিয়ে ইসলামাবাদ পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ৫০ বিলিয়ন রুপি বৈধ করার জন্য কয়েক বিলিয়ন রুপি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে ইমরান খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। ওই মামলায় ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইমরান খানকে প্রেপ্তারের পর নির্যাতন করা হয়েছে-এমন অভিযোগ তুলে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে পিটিআই। তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
তবে পিটিআইয়ের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিপুল সংখ্যক রেঞ্জার্স সদস্য ইমরান খানকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে দ্রুত গাড়িতে তুলছে। আরেকটি ভিডিওতে তার আইনজীবীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেছে। দলটি বলেছে, দেশকে রক্ষায় পাকিস্তানের জনগণকে এখনই বেরিয়ে আসতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সাইফুল্লাহ জানিয়েছেন, ইমরানকে বেশ কয়েকবার নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও আদালতে হাজিরা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ইমরানকে নির্যাতন করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, জমি বরাদ্দের মামলায় জাতীয় তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (ন্যাব) তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্থানীয় টিভিতে প্রচারিত সংবাদে বলা হয়, ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সামনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখানে জড়ো হয়েছেন পিটিআইয়ের কয়েক শ কর্মী–সমর্থক। সেখানে তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়।
অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা থেকে অপসারিত হওয়ার পর থেকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করছেন ইমরান খান।
সম্প্রতি তিনি অভিযোগ করেন, একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন। তার এমন অভিযোগে সেনাবাহিনী ক্ষোভ প্রকাশ করে গতকাল সোমবার তাকে সতর্ক করে। সেনাবাহিনী সতর্ক করার পরদিনই ইমরান গ্রেপ্তার হলেন।
গতকালের ওই সতর্কতার মধ্য দিয়ে আরও স্পষ্ট হয়, ইমরান খানের সঙ্গে পাকিস্তানের ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে।
বলা হয়ে থাকে, সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে ইমরান ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয় পেয়ে সরকার গঠন করেন। তবে মতবিরোধের জেরে সেনাবাহিনী সমর্থন প্রত্যাহার করলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তাকে অপসারণ করা হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার