শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

দুবাইয়ের রাস্তায় ঘুরছেন পলাতক আরাভ খান!


দুবাই মলের সামনে আরাভ খান। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩ মে, ২০২৩ ৩:২২ : অপরাহ্ণ

পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামের নামে একমাস আগে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করলেও দুবাইয়ের রাস্তায় ঘুরছেন তিনি!

দুবাইয়ের আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন।

দুবাই মলের সামনে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে আরাভ খান লিখেন-‘৯৫% সাংবাদিক দুঃখিত সাংঘাতিক যতই তুমি মানুষের পা ধরে নিচে নামাতে চাইবে ততই সে উপরে উঠবে ইনশাআল্লাহ । (বুগাটি উইথ আরভ খান)।’

পরে কমেন্টের ঘরে আবারো আরাভ লেখেন-‘প্রিয় দেশবাসী আপনাদের জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করি আমার জন্য দোয়া করবেন, আমিন। অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে।’

গত ২৩ মার্চ রাতে ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে মোস্ট ওয়ান্টেডের ৬৩ নম্বর তালিকায় আরাভ খানের নাম, ছবি ও পরিচয় সংযুক্ত করে প্রকাশ করা হয়।

আরও পড়ুন: অবশেষে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের তালিকায় আরাভ খান

আরাভ খানের প্রকৃত নাম রবিউল ইসলাম। এর আগে তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোল ‘রেড নোটিশ’ জারি করে। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান খুন হন ২০১৮ সালের ৮ জুলাই।

পরদিন গাজীপুরের জঙ্গল থেকে তার আধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় খুনের মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে পলাতক রবিউল(আরাভ খান)সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ৷

মামলার নথিপত্র বলছে, ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় করতে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের প্রযোজককে বনানীর একটি বাসায় ডেকে নেন আসামিরা । সেটি ছিল রবিউলের কথিত অফিস।

ওই প্রযোজকের ঘনিষ্ঠ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মামুন। তিনি প্রযোজকের ডাকে ঘটনাস্থলে যান৷ একপর্যায়ে মামুনকে হত্যা করা হয় ।

পরে লাশ গোপন করার জন্য বস্তায় ভরে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরের জঙ্গলে ৷ পরিচয় যাতে শনাক্ত না করা যায়, সে জন্য মরদেহ পোড়ানোও হয়৷

মামুন ইমরান খানকে খুন করার পরই ঘটনাস্থল থেকে স্ত্রী কেয়াকে নিয়ে সটকে পড়েন রবিউল ইসলাম ওরফে আপন। পরে দেশ থেকে পালিয়ে প্রথমে ভারতে যান। সেখানে আরাভ খান নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দুবাইয়ে চলে যান।

মামলার অভিযুক্ত আসামি ১০ জন৷ এদের মধ্যে দুজন কিশোরী ৷ রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার ধনী ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিতেন ৷

মামুন হত্যার ঘটনায় লাশ গোপন করতে সহায়তা করেছেন রবিউল ৷ খুনে সরাসরি জড়িতরাও রবিউলের সহযোগী৷

মামলাটিতে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন রবিউলের কতিথ স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া ৷ কারাগারে রয়েছেন আসামি রহমত উল্লাহ (৩৫), স্বপন সরকার (৩৯), দীদার পাঠান (২১), মিজান শেখ (২১), আতিক হাসান (২১) ও সারোয়ার হোসেন (২৩) ৷

মামলাটিতে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করেন আদালত ৷ এরপর ২০২২ সালের ২৮ জুলাই মামলায় একজন সাক্ষীকে হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ ৷ আর কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি ৷

গত বছরের ২০ ডিসেম্বর উচ্চ আদালত মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন ৷ সেটি বর্তমানে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন ৷

ডিবি জানিয়েছে, মামুন খুনের পর দেশ থেকে পালিয়ে রবিউল প্রথমে ভারতে যান ৷ সেখানে আরাভ খান নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দুবাইয়ে চলে যান। এদিকে তার সঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সম্পর্ক রয়েছে বলে কথা উঠেছে।

এরপর সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তিনি রবিউলকে চেনেন না, তার সঙ্গে প্রাথমিক পরিচয়ও নেই।

রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি আরাভ জুয়েলার্স নামে দুবাইয়ে সোনার বড় দোকান চালু করে আবারও আলোচনায় আসে সে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর