রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৮ এপ্রিল, ২০২৩ ৪:১৭ : অপরাহ্ণ
সরকার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে রাজনৈতিক সংলাপের আহবান জানালে তাতে বিএনপি সাড়া দিবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করার সুযোগ নেই-এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার পদত্যাগের বিষয়ে রাজি হোক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে রাজি হোক, তাহলেই হয়ে গেল। আগে পদত্যাগ করতে হবে, তারপর সংলাপ।’
আজ শনিবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। এর আগে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বক্তব্যের সূত্র ধরে সংলাপের বিষয়ে বিএনপির আগ্রহের কথা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে সরকারের ওপর নির্ভর করে, একদম, টোটালি। সরকার যদি চায় সংঘাত এড়িয়ে তারা সামনের দিকে যাবে, তাহলে প্রথম কাজটা করতে হবে বিরোধী দলগুলো যা চাইছে, সেই দাবি পূরণ করতে হবে। অর্থাৎ পদত্যাগ করে আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে।’
রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতিকে সম্মান করি, কিন্তু সাংবিধানিকভাবেই তো তাঁর বেশি ক্ষমতা নেই। আমরা মনে করি, গতানুগতিকভাবে তিনি সরকারের লিখে দেওয়া বক্তব্য পাঠ করেছেন। তার পরেও ওখানে একটা কথা আছে—আমার ভালো লেগেছে যে, তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রবিহীন উন্নয়ন সর্বজনীন হয় না। এ-ও বলেছেন, সংঘাত আর প্রতিহিংসা দিয়ে গণতন্ত্রের চর্চা হয় না। এ কথাগুলো ভালো। কিন্তু গণতন্ত্রের চর্চা যারা করছেন, সেখানে তো গণতন্ত্রই নেই, কী করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’
জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তির মূল্যায়ন করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি অনির্বাচিত সংসদ, সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর এবং এর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।
দলের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ২২টি রাজনৈতিক দল গত বছরের ২ আগষ্ট থেকে আমর আন্দোলন করে আসছি। আমাদের প্রধান দাবি সরকারের পদত্যাগ এবং তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এ আন্দোলন করতে গিয়ে ইতিমধ্যে ১৭ জন জীবন দিয়েছে। এ পর্যন্ত আমাদের ৬ শ নেতাকর্মী গুম হয়েছে। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত রাখা হয়েছে। এ সরকারের আমলে আমাদের ৩৫ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলন ও বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান নুরুল আমীন ব্যাপারী, গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডিএলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মণ্ডল, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি নাসিম খান, বাংলাদেশ পিপলস লীগের সভাপতি গরীব নেওয়াজ বৈঠকে অংশ নেন।