রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৫ মার্চ, ২০২৩ ১০:৫৩ : অপরাহ্ণ
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছে তার স্বীকৃতি তারা দেয় না, কারণ এতে তাদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা রয়েছে। সেই সময় আমেরিকা, ইংল্যান্ড সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল না। কিন্তু সেসব দেশের জনগণসহ বিশ্ববাসী আমাদের পক্ষে ছিল। তাই আমরা মাত্র ৯ মাসে এই যুদ্ধে জয়লাভ করেছি।’
আজ শনিবার গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়া প্রসঙ্গে আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, ‘স্বীকৃতির বলয় তো ওদের হাতে। দেখেন না, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ হয়, তখন একরকম। ওনারা যখন করে, তখন আরেক রকম। সাদ্দামের বেলায় এক নীতি, ওনাদের বেলায় আরেক নীতি। আফগানিস্তানে আরেক নীতি। সে কারণে আমরা স্বীকৃতি না পেলেও শেখ হাসিনার নির্দেশে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করেছি। জাতীয়ভাবে এটা পালন করছি। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য কূটনীতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। আমরা ন্যায়ের পক্ষে ছিলাম। তারা স্বাধীনতা যুদ্ধকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যায়িত করার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু দূরদর্শী বঙ্গবন্ধু সেই ফাঁদে পা দেননি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘কারণ যাই হোক, ১৯৭১ সালে অনেক রাষ্ট্র পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিল এবং ওই রাষ্ট্রগুলো এখন পৃথিবীব্যাপী গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের বিষয়ে জোরালো বক্তব্য দিচ্ছে। অনেককে তারা এসব বিষয়ে সবকও দিয়ে থাকে। তিনি বলেন, সেই রাষ্ট্রগুলো, আমরা না চাইলেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়। কিন্তু আজ ২৫শে মার্চ বাংলোদেশ গণহত্যা দিবসে তারা কী বলছে সেটির দিকে আমরা তাকিয়ে থাকবো।’
কারও নাম উল্লেখ না করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৫২ বছর পরে ঘটনা স্বীকার করে নিলে কেউ খাটো হবে না। বর্তমান বিশ্বের একাধিক রাষ্ট্র এক অর্থে বলতে গেলে গণহত্যার পক্ষে ছিল এবং তারা অব্যাহতভাবে পাকিস্তানকে সামরিক অস্ত্র সরবরাহ করে গেছে। তারা পাকিস্তানকে, ইয়াহিয়া খানকে, টিক্কা খানকে তাদের বর্বরতা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।’
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ছিলেন এশিয়া জাস্টিস অ্যান্ড রাইটস-এর প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার প্যাট্রিক বার্গেস।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বনামধন্য অধিকার কর্মী এবং গণহত্যা গবেষক ব্যারিস্টার বার্গেস ‘বাংলাদেশ গণহত্যা এবং বৈশ্বিক সম্প্রদায়: তারপর এবং এখন’- শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় অন্যদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।