রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ মার্চ, ২০২৩ ৩:৪৫ : অপরাহ্ণ
ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা ও কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীকে ২০১৯ সালের ফৌজদারি মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় লোকসভা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
সংসদ সদস্য পদ বাতিল হওয়ায়, আইন অনুযায়ী অন্তত আগামী ৬ বছর কোনো নির্বাচনে লড়তে পারবেন না রাহুল।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানিকর মামলায় দুই বছরের সাজা দিয়েছেন দেশটির আদালত।
একই সঙ্গে আপিল করার জন্য তাকে ৩০ দিনের জামিন দিয়েছে আদালত। গুজরাটের সুরাটের একটি আদালত রাহুলের বিরুদ্ধে এই রায় দেন।
এই রায়ের ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ ও জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাতিল করা হলো রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্য পদ।
আজ শুক্রবার লোকসভা সচিবালয়ের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কেরালার ওয়েনাড সংসদীয় নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্বকারী শ্রী রাহুল গান্ধী দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আর্টিকেল ১০২(১)(ই) এর বিধান অনুসারে লোকসভার সদস্যপদ থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। তা কার্যকর হবে ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ থেকে।’
এই সিদ্ধান্তটির মধ্যে ভুল দেখছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মনীশ তেওয়ারি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে তিনি বলেন, লোকসভা সচিবালয় কোনো সংসদ সদস্যকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে না। রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে এটি করতে হবে।
কংগ্রেসের আরেক সিনিয়র সংসদ সদস্য শশী থারুর বলেছেন, এটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো কিছু না। এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, আদালতের রায়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপটি দেখে আমি হতবাক। এটি আমাদের গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।
এই পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদি সরকারে বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ তুলে অন্য বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলনের পথে নেমেছে কংগ্রেস। শুক্রবার দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে ১২টি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বাম, জেডি (ইউ), ডিএমকের পাশাপাশি বৈঠকে ছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টিও (আপ)। এরপর সংসদ ভবন থেকে মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান তারা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে ২০১৯ সালে কর্নাটকে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় বিতর্কিত মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধী।
তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘দেখা যাচ্ছে যারাই দুর্নীতি করছেন তাদেরই পদবি মোদি। আইপিএলে লুট করেছিলেন ললিত মোদি। নীরব মোদি টাকা লুট করে পালিয়ে গেছেন। আর যিনি তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন তিনিও একজন মোদি। দুজনেই একই রাজ্যের।’
এরপরেই গুজরাতের বিজেপির এক সংসদ সদস্য সুরাতের আদালতে মামলা করেন। তারও পদবি মোদি। তিনি আদালতে বলেন, মোদি পদবিকে রাহুল গান্ধী অপমান করেছেন।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মামলার রায়কে কেন্দ্র করে গুজরাটের সুরাতে গিয়ে পৌঁছান রাহুল গান্ধী। সেখানে তাকে স্বাগত জানান রাজ্যের নেতারা।
রাহুলের আগমন উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার–ফেস্টুন নিয়ে অবস্থান নেন গুজরাট রাজ্যের কংগ্রেস নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা। কারও কারও হাতে রাহুলকে ‘শের–ই–হিন্দুস্তান’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।