রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১৮ মার্চ, ২০২৩ ৯:২৪ : অপরাহ্ণ
বিএনপি নেতাকর্মীদের আন্দোলনের সৈনিক আখ্যায়িত করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আপনারা বিএনপির শুধু নেতাকর্মী নন, যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকরা যে প্রস্তুতি নেয়, সেটি আপনারা শিখেছেন। আপনারা আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য সৈনিক হয়ে গেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে হুকুমের সঙ্গে সঙ্গে সৈনিকরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। এটাই প্রমাণ করে, শেখ হাসিনার পতন অবশ্যম্ভাবী। শিগগিরই এ সরকারের পতন হবে।’
আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি নূর আহমদ সড়কে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
‘আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতি এবং বিএনপির ঘোষিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা’ দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।
আমীর খসরু বলেন, ‘আওয়ামী সিন্ডিকেটের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়ছে। আওয়ামী সিন্ডিকেট বেশি দামে পণ্য মানুষের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সাধারণ মানুষের দুই বেলা খাওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। স্কুলের বেতন দিতে কষ্ট হচ্ছে, চিকিৎসার খরচ মেটাতে কষ্ট হচ্ছে। আওয়ামী চোর ব্যতীত বাংলাদেশের বাকি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।’
সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি। যাদেরকে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে, তারা সবাই আওয়ামী লীগের। এক্ষেত্রে কোনো টেন্ডার হয়নি। প্রধানমন্ত্রী অফিসে যেতে বলেছেন। একটা একটা করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরা বিদ্যুতের লাইসেন্স নিয়ে বিদুৎ উৎপাদনের প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু উৎপাদন না করেও কুইক চার্জের নামে ৯০ হাজার কোটি টাকা তারা সরকারের কোষাগার থেকে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনো মামলা করতে না পারে, সেটার জন্য আইন করেছে। অর্থাৎ দুর্নীতি করার জন্য আইন করেছে তারা।’
আমীর খসরু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের ভোট চোর, ব্যাংক চোর, শেয়ার বাজার চোরসহ যত উপাধি আছে বলে শেষ করা যাবে না। এতো চোর, এতো চুরি বিশ্বের কোনো দেশে হয় না।’
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর দাম্ভিকতায় প্রমাণিত হচ্ছে, তারা ভয়ের মধ্যে আছে। কারণ তারা জানে তাদের সময় শেষ হয়ে গেছে। ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, এই ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকার দুর্নীতি ও লুটপাটে ব্যস্ত। তারা জনগনের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে জনগনের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে কোন প্রকার প্রচেষ্টা নেই। তাদের একমাত্র লক্ষ্য দমন নিপীড়নের মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ জানে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না। দেশের জনগণ নৌকাকে চিরতরে ডুবিয়ে দেবে।
বিশিষ অতিথর বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, দেশের মানুষ আজকে ভোট দিতে পারে না। এ সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। দেশের সম্মান নষ্ট করেছে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উপহাসের পাত্র হিসেবে পরিণত করেছে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট চুরির নতুন স্টাইল ইভিএম মেশিন কেন্দ্র থেকে বাইরে নিয়ে গেলো যুবলীগ নেতা, দায়িত্বরত পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখলো। এটাই প্রকৃত আওয়ামী লীগের চরিত্র। এদের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আদালত প্রাঙ্গনে গত দুইদিন তান্ডব চালিয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনা নজিরবিহীন। সুপ্রিম কোর্ট আর সুপ্রিম কোর্ট নেই। এটা এখন আওয়ামী লীগের দখলে চলে গেছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, হাজী মো. আলী, মাহবুব আলম, নিয়াজ মো. খান, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস এম আবুল ফয়েজ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, মো. কামরুল ইসলাম প্রমুখ।