বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

কেনো এই রেষারেষি, নাছির-নওফেলকে প্রশ্ন কাদেরের


চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগের সভায় বক্তব্য রাখেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :৪ মার্চ, ২০২৩ ৭:৪৪ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম নগরীতে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের বিরোধ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আজ শনিবার বিকেলে নগরীর কাজীর দেউড়ি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদের শোক সভায় তিনি এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এই শোকসভার আয়োজন করে।

মঞ্চে উপস্থিত নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও শিক্ষাউপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের দিকে তাকিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে নাছির-নওফেল আছে। আমি তরুণ-তুর্কিদের নিয়ে মাঝে মাঝে দুশ্চিন্তায় থাকি। কেন এই রেষারেষি? এটা বন্ধ করতে হবে। দুজন একই আদর্শের অনুসারী। তাহলে কেন পাল্টাপাল্টি? ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এসব যখন আমরা পত্রপত্রিকায় দেখি, আমরা লজ্জা পাই। আমি একটা কথা বলে রাখি, অপকর্মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স। এ পর্যন্ত তিনি কাউকে ছাড় দেননি। তিনি দলের মেয়র-এমপি কাউকে ছাড় দেননি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চট্টগ্রামের সব প্রদীপ নিভে গেছে। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এখন জীবনের অপরাহ্নে আছেন। মৃত্যুর পর নেতারা কিছুদিন রাজনৈতিক দলের থাকে। এরপর হয়ে যায় পরিবারের। আজকে জাবেদ মন্ত্রী আছে বলে আখতারুজ্জামান চৌধুরীর মৃত্যু দিবস ভালোভাবে পালিত হয়। নওফেল আছে বলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুদিবস ভালোভাবে পালিত হয়।’

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনের গতি কমে গেছে, আর তাদের নেতাদের গলার জোর বেড়ে গেছে। খালেদা জিয়া দেশ চালাবে, তারেক রহমানকে এয়ারপোর্টে রিসিপশন দিবে। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে তারা কত হম্বতম্বি করলো। সমাবেশের নামে ৭ দিন ধরে পিকনিক করলো। এসব হম্বিতম্বি এখন কোথায় গেলো?’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি আমাদেরকে নাকি লাল কার্ড দেখাবে। তারা এখন নীরব পদযাত্রা করছে। আজকে শুনলাম, নীরব পদযাত্রার পরে হচ্ছে নিরীহ মানববন্ধন। তাদের গলার যত জোর, আন্দোলনের ততো গতি নেই। এটা হলো বাস্তবতা।’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা ভয় পাবো কেন? ভয় তো পেয়েছো তোমরা। বিএনপি জানে, ইলেকশন হলে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জিতবে। সেজন্য তারা ইলেকশনকে ভয় পায়। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তাকে বিএনপি ভয় পায়। সেজন্য ফখরুল-মোশাররফরা আজকে ইলেকশনে আসতে চায় না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা বলে, আমরা নাকি লুট করেছি? হাওয়া ভবনের লুটপাট কি ভুলে গেছেন? হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, আমেরিকায় ধরা পড়েছে, সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে। আমরা লুটপাট করি? আপনারা হলেন বর্গী। বর্গীর চেয়েও ভয়ংকর বিএনপি নামক লুটেরা দলটি।’

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সিরিয়াল ছিল আমার। কিন্তু সিরিয়াল ভঙ্গ করে চলে গেলেন মোছলেম উদ্দিন। সে দলের জন্য অনেক লড়াই-সংগ্রাম করেছে। চট্টগ্রামে পলোগ্রাউন্ডের জনসভায় সে অনেক পরিশ্রম করেছে। জনসভার কারণে কেমো পর্যন্ত মিস করেছে। তার আশা ছিল আরও অনেক দিন বেচে থাকার। কিন্তু তা আর হলো না।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মোছলেম উদ্দিন কর্মী থেকে নেতা হয়েছেন। তিনি রাজপথের ত্যাগী নেতা ছিলেন। হাসপাতালে শয্যাশায়ী থাকলেও তাঁর মনোবল অটুট ছিলো। তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছেন। তাঁর জীবন থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।’

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘মোছলেম উদ্দিন একজন আপাদমস্তক নেতা ছিলেন। দক্ষ সংগঠক ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি। তিনি আমার বাবার সঙ্গে ২৭ বছর রাজনীতি করেছেন। এমপি হওয়া তাঁর জীবনের স্বপ্ন ছিল। তিনি এমপি হওয়ার পর আমি অনেক খুশি হয়েছি।’

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াশিকা আয়েশা খান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান প্রমুখ।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর