রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ৭:৩৬ : অপরাহ্ণ
ঋণ আবেদনের দুই দিন আগেই ঋণগ্রহীতার নামে ৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা মঞ্জুর করে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। অভিনব এ জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য ও তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর ছেলে সৈয়দ তৈয়বুল বশর ও তার বড় ভাইয়ের ছেলে সৈয়দ মাহাতাবুল বশরসহ ১৪ জনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার বিকেলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ কমিশনের সহকারী পরিচালক পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলা বাদী অনুসন্ধান কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, নজিবুল বশরের ছেলে সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভান্ডারী ও প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান কে এম খালেদসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান কে এম খালেদের ছেলে কে এম রাকিব হোসেন ও আত্মীয় খন্দকার মো. মোস্তাহিদ, প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিচালক মুসলিমা শিরিন, জেড এম কায়সার, মো. অলিউজ্জামান, এম শাহাদত হোসেন কিরন, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গুলশান আরা হাফিজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট তাজরিয়ান হক, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদ খান, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান কবির খান ও সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রেজাউল হক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর ছেলে সৈয়দ তৈয়বুল বশর শর্তসাপেক্ষে পাঁচ বছর মেয়াদি টার্ম ঋণের জন্য আবেদন করেন। দেখা যায়, তাদের আবেদনের দুদিন আগে অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর প্রাইম ফাইন্যান্সের বোর্ড সভায় ঋণ দুটি অনুমোদন করা হয়।
সৈয়দ তৈয়বুল বশরকে ২০ কোটি টাকা ও সৈয়দ আফতাবুল বশরকে ১৯ কোটি ৪০ রাখ টাকা পাঁচ বছরের টার্ম লোন দেয় প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
এ ঋণের বিপরীতে সমপরিমাণ অর্থ প্রাইম ব্যাংকে শেয়ার সিকিউরিটি হিসেবে লিয়েন রাখার কথা উল্লেখ করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ মালের ১৮ ডিসেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট-এর পরিচালনা পর্ষদের ১৯৭তম বোর্ড সভায় গ্রাহকদের অনুকূলে ঋণ মঞ্জুর করা হয়।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ঋণগ্রহীতাদের ঋণের জন্য আবেদন করার আগেই বোর্ড সভায় তা মঞ্জুর করা হয়। ঋণের জন্য গ্রাহক দুই ভাই আবেদন করেন ২০১১ সালে ২০ ডিসেম্বর তবে ঋণ মঞ্জুর করা হয় ১৮ ডিসেম্বর।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১১ সালে ১৮ ডিসেম্বর ঋণ মঞ্জুর করার পর একই মাসের ২৯ ডিসেম্বর দুই ভাইয়ের ব্যাংক হিসাবে টাকা ঋণ হিসাবে প্রদান করা হয়। তারা নিজেদের ব্যাংক হিসাব থেকে পে অর্ডারের মাধ্যমে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান কে এম খালেদকে ১ কোটি ৩১ লাখ ৬ হাজর ২১৯ টাকা, খালেদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান খালেদ টেক্সটাইল মিলসের অনুকূলে পে অর্ডার করেন ১৮ কোটি ৬৮ লাখ ৯৪ হাজার ১২৭ টাকা। খালেদের ব্যাংক হিসাবের এ টাকা তারা উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়।
দুই ছেলের বিরুদ্ধে দুদকে মামলার বিষয়ে চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর সাংবাদিকদের বলেন, ‘৩৯ কোটি টাকা লোনের বিপরীতে ৬৫ কোটি টাকা জমা দেওয়া আছে। যে ব্যবসার জন্য লোন নেওয়া হয়েছে বা যেখানে দেওয়া হয়েছে তাদের নথিও এনবিআরে আছে, এটা মানিলন্ডারিং হয় কী করে? আমরা এর বিরুদ্ধে রিট করব’।