রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২২ জানুয়ারি, ২০২৩ ৫:০৬ : অপরাহ্ণ
রাশিয়া জেনেশুনে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা একটি জাহাজের নাম পরিবর্তন করে সেটিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম পাঠানোর বিষয়টি ‘খুব তাজ্জব’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটি আশা করিনি।’
আজ রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রাশিয়ার ৬৯টি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এর বাইরে তাদের কয়েক হাজার জাহাজ আছে। আমরা আশা করি, রাশিয়া এখন নিষেধাজ্ঞা নেই এমন একটি জাহাজে পণ্যগুলো পাঠাবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রাশিয়াকে বলেছি, তাদের যেসব জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে, সেগুলো ছাড়া অন্য যেকোনো জাহাজে পাঠাতে পারে। নিষেধাজ্ঞা আছে, এমন জাহাজ আমরা গ্রহণ করতে চাই না।’
পরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য পাঠানোর বিষয়ে রাশিয়া কোনো বার্তা দিয়েছে কিনা-জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে ওপরের লেভেলে কাজ করছি।’
মন্ত্রীর পরই সাংবাদিকরা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের কাছে জানতে চান, রাশিয়ার জাহাজ ফেরত দেওয়াকে কেন্দ্র করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য পাঠানো নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে যাচ্ছে কিনা?
এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটু দেরি তো হবেই। এটুকু বলতে পারি, সেই জাহাজটিকে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হয়নি। রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা থাকা জাহাজ বাংলাদেশে পাঠাল।’
এ বিষয়ে মস্কোকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কিনা ঢাকা-জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এটা আমার সম্পূর্ণ জানা নেই। তবে এটা আমি প্রত্যাশা করি, বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই সেটা জানিয়েছে। তারা বিষয়টা ডিল করছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৪ ডিসেম্বর উরসা মেজর নামে রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটির রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রঙ ও নাম বদল করে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা রাশিয়ার একটি জাহাজ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে আসছে বলে নিশ্চিত হয় বাংলাদেশ।
পরে বাংলাদেশ ‘স্পার্টা ৩’ নামে ওই জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে। যদিও জাহাজটিকে বন্দরে পণ্য খালাসের অনুমতি দিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করে রাশিয়া।
তবে জাহাজটি বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার বিষয়ে অনড় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। এ অবস্থায় জাহাজটি ভারতের যেকোনো বন্দরে পণ্য খালাস করে পরে তা অন্য জাহাজে করে বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করে।
কিন্তু জাহাজটি প্রায় দুই সপ্তাহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষা করে নয়াদিল্লির অনুমতি পেতে ব্যর্থ হয়।
এ অবস্থায় ১৬ জানুয়ারি ভারতের জলসীমা ছেড়ে চলে যায় জাহাজটি।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকলেও ভারত বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাহাজটির পণ্য খালাসের ঝুঁকি নেয়নি।
আরও পড়ুন: রূপপুরের সরঞ্জাম নিয়ে ভারতের বন্দরেও ভিড়তে পারেনি সেই রুশ জাহাজ