রাজনীতি সংবাদ প্রতিনিধি, সিলেট প্রকাশের সময় :২০ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:০৮ : পূর্বাহ্ণ
প্রবাদে আছে, মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে। তবে বাঘ কাঁপছে কি না, সেটা জানা না গেলেও মাঘের শীতে চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের মানুষ যে কাঁপছে সে খবর মিলেছে।
আজ শুক্রবার ভোর ৬টায় শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস সর্বনিম্ন ৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। এটি চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
গতকাল ছিল ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে মৌলভীবাজারে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে অবস্থান করছে। বেশ কয়েকদিন ধরে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত থাকছে ঘন কুয়াশা। দুপুরে উত্তাপহীন সূর্যের দেখা মিললেও বিকেলের আগেই তা ঢাকা পড়ছে কুয়াশার চাদরে, সঙ্গে হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া-এমন বিরূপ আবহাওয়ায় নাকাল জনজীবন।
আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান বলেন, তাপমাত্রা নিচে নামার কারণে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা।
তীব্র শীতে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। নিম্নবিত্ত, অসচ্ছল ও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছে বিপাকে। হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে কাঁপছেন তারা।
ভোর থেকেই এলাকার বিভিন্ন মোড়ে ও চায়ের দোকানে শীত নিবারণের চেষ্টায় আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষদের।
শীতের কারণে সময়মত কাজে যোগ দিতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষ। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন চা শ্রমিক, বোরো চাষি, ছিন্নমূল ও দিনমজুররা।
মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি, হাকালুকি, হাইল হাওর বেষ্টিত এলাকার অধিকাংশ মানুষই খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস।
শীত এলেই তাদের কষ্ট বাড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে সময় মত কাজে যেতে পারছে না তারা।
কাওয়াদীঘী হাওর এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, বাইরে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, তবুও কাজের জন্য বের হয়েছেন।
সদর উপজেলার মৌলভী চা বাগানের শ্রমিক রামকানু বলেন, হাড় কাঁপানো শীতে বাগানে কাজ করতে অনেক কষ্ট। কাজে না গেলে মজুরি মিলবে না।
পৌর শহরের দিনমজুর নজির আলী বলেন, প্রতিদিন সকালে কাজ পাবো এই আশায় বের হই, কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে বেশ ঠাণ্ডা পড়ায় কাজও পাই না।
মৌলভীবাজার জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ে হাসপাতালে। সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় শিশু ও বয়স্করা। অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ রোগীকে প্রতিদিন আউটডোর এবং ইনডোরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিশ্বজিৎ দেব বলেন, শীতের প্রভাবে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশু ও বয়স্ক রোগীর চাপ বাড়ছে।