রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ৮:১৩ : অপরাহ্ণ
ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরে দেশকে কী দিয়েছে জনগণকে তার বিচার-বিশ্লেষণ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের চতুর্থ বর্ষপূর্তি ও পঞ্চম বছরে পদার্পণ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের শেষে অথবা সামনের বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এখন থেকেই স্বাধীনতা বিরোধী, ক্ষমতালোভী, জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনকারী আর পরগাছা গোষ্ঠির সরব তৎপরতা শুরু হয়েছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘এদের লক্ষ্য ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি করে পিছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা। গণতন্ত্রেও অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা। এরা লুণ্ঠন করা অর্থ দিয়ে দেশে-বিদেশে ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী এবং বিবৃতিজীবী নিয়োগ করেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরা মিথ্যে এবং ভুয়া তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এদের মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না।’
আরও পড়ুন: দিনের ভোট রাতে করে চার বছর ক্ষমতায়, এটা লজ্জার: ডা. জাফরুল্লাহ
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বাংলাদেশে এই প্রথম একটি আইন পাশ করা হয়েছে। সেই আইনের আওতায় সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিক স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। সরকার সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণের শান্তিতে বিশ্বাসী, জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। জনগণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে আওয়ামী লীগ দেশ গড়ার জাতীয় দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে। যদি বিজয়ী না করে, তাহলে আমরা জনগণের কাতারে চলে যাবো। তবে, যেখানেই থাকি, আমরা জনগণের সেবা করে যাবো।’
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ১৬ বছর আগে বিএনপি-জামায়াত শাসনামলের ‘দুঃশাসন’ ও এই সরকারের টানা ১৪ বছরের ক্ষমতায় থাকার আর্থসামাজিক ‘অগ্রগতির’ খতিয়ান তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সৃষ্ট ‘অরাজক’ পরিস্থিতির মুখে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নিয়েও জনগণের প্রত্যাশা পূরণে শুধু ব্যর্থই হয়নি। সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে কালিমালিপ্তও করে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা ২০১৮ সালের মে মাসে মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি। নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ সম্পন্ন করেছি। এই সেতু দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে সড়ক পথে ঢাকা এবং অন্যান্য জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আমরা যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেছি। কিছুদিনের মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাতাল সড়কপথ বঙ্গবন্ধু টানেল চট্টগ্রামে উদ্বোধনের মাধ্যমে আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হবে। পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনের নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করার পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।