রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ৮:৪৪ : পূর্বাহ্ণ
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন আজ। করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবারের সম্মেলন অনেকটাই সাদামাটাভাবে আয়োজন করেছে দলটি। ইতোমধ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
তবে এবারের সম্মেলন নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে তেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। দলটির দুই কার্যালয়ে আগের সম্মেলনে যেভাবে লোক সমাগম হতো এবার অনেক কম উপস্থিতি। কেন্দ্রীয় নেতারাও নিরুত্তাপ, তৃণমূলেও তাপ নেই।
আওয়ামী লীগের সম্মেলনে মূল আকর্ষণ থাকে সাধারণ সম্পাদক পদটি নিয়ে। সভাপতি শেখ হাসিনার বাইরে নেতাকর্মীরা কাউকে ভাবতে না পারার কারণে শীর্ষ এ পদ নিয়ে আলোচনা থাকে না।
সাধারণ সম্পাদক গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওবায়দুল কাদেরই থাকছেন-এমন গুঞ্জণে এ পদটি নিয়েও আলোচনায় ভাটা পড়েছে।
তবে কেউ কেউ বলছেন, শেখ হাসিনা চমক দিতে পারেন। তাই অন্যবারের মতো এবার সবাইকে ‘ক্লু-লেস’ অবস্থায় রেখেছেন দলীয় প্রধান। ঘোষণার আগ পর্যন্ত এটি নিজের মধ্যেই রাখতে চান তিনি।
অবশ্য মাসখানেক ধরে ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা শুনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সাধারণ সম্পাদক পদে তাকেই এগিয়ে রাখছেন।
সম্পাদকমণ্ডলীর গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বলেন, আওয়ামী লীগে যেন এক ধরনের নেতৃত্বশূন্যতা চলছে। কারণ, ওবায়দুল কাদেরকে ছাড়া কেন্দ্রীয় আর কোনো নেতাকে সাধারণ সম্পাদকের যোগ্য মনে করছেন না অনেকেই। এটা দলের জন্য অশনিসংকেত। শেখ হাসিনার বাইরে এই দলে আর কেউ অপরিহার্য নন। ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে যোগ্যতা নেই-এটা কেন আলোচনায় আসবে।
এবারের সম্মেলনের প্রত্যয় ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। এই বিষয়কে সামনে রেখেই সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়’।
প্রতিবারের মতোই এবারের সম্মেলনেও থাকছে আওয়ামী লীগের ব্যতিক্রমী প্রত্যয় বা স্লোগান। তৈরি হয়েছে থিম সং।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসবেন। পরে আধা ঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। পরে শোক প্রাস্তাব উত্থাপন করবেন দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য দেবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে।
২২তম জাতীয় সম্মেলনে সারা দেশ থেকে প্রায় সাত হাজার কাউন্সিলর এবং লক্ষাধিক নেতাকর্মী অংশ নেবে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন।
এই অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মশিউর রহমান এবং সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তার তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ১৪ দল, জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত করেছে আওয়ামী লীগ।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। সর্বশেষ সম্মেলনের বাজেট ছিল তিন কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এবারের সম্মেলনের জন্য বাজেট তিন কোটি ১৩ লাখ টাকা অনুমোদন করেছে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি।