শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪ | ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৩ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা অন্যান্য দল

যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামছে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১৪ দফা ঘোষণা


রাজনীতি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :১২ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:৩৫ : অপরাহ্ণ
রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দফা ঘোষণা করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গঠিত হওয়া গণতন্ত্র মঞ্চ আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে তাদের ১৪ দফা ঘোষণা করেছে। জোটটির ১৪ দফার সঙ্গে বিএনপির ঘোষিত ১০ দফার অনেক মিল রয়েছে।

আজ সোমবার রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ১৪ দফা ঘোষণা করা হয়।

গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা ঘোষণা করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি বলেন, আমরা চাই ১৪ দফার আলোকে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলতে।

গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা-

১. বর্তমান অনির্বাচিত অবৈধ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ভোটবিহীন, গণতন্ত্রহরণকারী, লুটেরা ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।

২. বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নিপীড়নের অংশ হিসেবে দণ্ডপ্রাপ্ত সব বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সাজা বাতিল, সব হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সব রাজনৈতিক কারাবন্দিদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

৩. রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং বেকারদের আত্মকর্মসংস্থানের বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৪. কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, পাটকল চিনিকলসহ বন্ধ কলকারখানা চালু, শ্রমিক ও শ্রমজীবীদের বাঁচার মতো মর্যাদাপূর্ণ মজুরি ঘোষণা ও টেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

৫. জাতীয় স্বার্থ, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সমতা ন্যায্যতা পারস্পরিক স্বার্থের স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক সমস্যাদির সমাধান করতে হবে।

৬. সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টি করে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উপাসনালয় ভাঙচুর এবং তাদের সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাদের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. ক) জরুরী ভিত্তিতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে খাদ্যপণ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার সিন্ডিকেট মুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিদ্যমান অভাবের পরিস্থিতিতে গ্রাম শহরের গরীব ও স্বল্পআয়ের পরিবারসমূহের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা ও নগদ অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

খ) গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানিসহ সেবামূলক খাতসমূহে স্বেচ্ছাচারী পন্থায় মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। বিদ্যুৎ খাতে অনিয়ম ও দূর্নীতিতে ডুবে থাকা রেন্টাল – কুইক রেন্টাল প্রকল্প ও এই খাতে দেয়া দায়মুক্তি আইন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। গ) সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত, সুলভে গণপরিহনের ব্যবস্থা ও বাসাভাড়ার যৌক্তিক সীমা নির্ধারণ করা হবে।

৮. বিগত বছরগুলোতে, বিশেষ করে গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, শেয়ার মার্কেট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসহ রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষেত্রে সংগঠিত রোমহর্ষক নজিরবিহীন দূর্নীতি ও এর দায়দায়িত্ব চিহ্নিত করতে শক্তিশালী কমিশন গঠন করতে হবে। দূর্নীতি, লুটপাট ও অর্থ পাচারের সাথে যুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে দূর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ-সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৯. গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সকল নাগরিকদের উদ্ধার করতে হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশনের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিটি ঘটনার বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা হবে।

১০. সাম্প্রদায়িক উসকানি সৃষ্টি করে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উপসানালয় ভাংচুর এবং তাদের সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাদের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

১১. স্বাস্থ্যকে সম্পদ হিসাবে বিবেচনা ও রিনা চিকিৎসায় কোন মৃত্যু নয়‍‍` এই নীতির ভিত্তিতে সমগ্ৰ স্বাস্থ্যখাত ঢেলে সাজাতে হবে স্বাস্থ্যখাতে রাষ্ট্রীয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ও বেসরকারি খাতে মুনাফার লাগাম টেনে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে।

ক) শিক্ষা অধিকার, বানিজ্যিক পণ্য নয়‍‍` এই নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে সবার জন্য একই মানের শিক্ষা নিশ্চিত, মাতৃভাষায় শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে জিডিপি‍‍`র ন্যূনতম ৬ শতাংশ বরাদ্দ প্রদান করা হবে।

১২. রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং বেকারদের আত্মকর্মসংস্থানের বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

১৩. কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, পাটকল-চিনিকলসহ বন্ধ কলকারখানা চালু, শ্রমিক ও শ্রমজীবীদের বাঁচার মত মর্যাদাপূর্ণ মজুরী ঘোষণা ও ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

১৪. জাতীয় স্বার্থ, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সমতা, ন্যায্যতা, পারষ্পরিক স্বার্থের স্বীকৃতি ও স্বীকৃত আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক সমস্যাদির সমাধান করতে হবে।

আরও পড়ুন: ১০ দফা দাবিতে মাঠে নামছে জামায়াতও, ২৪ ডিসেম্বর দেশব্যাপী গণমিছিল

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর