বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা খেলা

নাটকীয়তায় মোড়ানো ম্যাচে রোমাঞ্চকর জয় বাংলাদেশের


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩০ অক্টোবর, ২০২২ ১২:৪৩ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নাটকীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

শেষ বলে জিম্বাবুয়ের ব্যাটার ব্লেসিং মুজারাবানি। শেষ বলেও উইকেট পেলেন মোসাদ্দেক। এবারও স্ট্যাম্পিং। আউট ধরে নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়রাও মাঠ ছেড়ে উঠে যায়।

কিন্তু রিপ্লাইতে দেখা যায়, বল স্ট্যাম্পে আসার আগেই বল ধরে ফেললেন নুরুল হাসান সোহান। ফলে থার্ড আম্পায়ার রিভিউ করে দিলেন নটআউট এবং ঘোষণা করলেন নো বল।

১ রান যোগ করে দুই দলকে আবারো মাঠে নামিয়ে আনা হয় এবং ফ্রি-হিট দিয়ে শেষ বলটি করতে বলা হয়। শেষ বলে মুজারাবানি কোনো রান করতে পারেননি।

রুদ্ধশ্বাস এই ম্যাচে বাংলাদেশের করা ১৫০ রানের জবাব দিতে নেমে ১৪৭ রানে থেমে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ফলে ৩ রানে জিতলো বাংলাদেশ।

এই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখলো সাকিবরা। বর্তমানে টাইগারদের অবস্থান টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে।

আজ রোববার ব্রিসবেনের গ্যাবায় টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো করতে পারেনি টাইগাররা। রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন ওপেনার সৌম্য সরকার।

মুজারাবানির বলে রেগিস চাকাভার হাতে ক্যাচ দেন সৌম্য। ১০ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

সৌম্যর বিদায়ের পর শান্তর সঙ্গে দলের হাল ধরেছিলেন লিটন। দুই বাউন্ডারিতে ভালো কিছুর আভাসও দিয়েছিলেন।

তবে ষষ্ঠ ওভারে অহেতুক স্কুপে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসলেন লিটন। ১২ বলে ৩ চারে ১৪ রান করেন তিনি।

লিটনের পরে চাপের মুখে দুই উইকেট হারিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ইতিবাচক ব্যাট করতে থাকেন ওপেনার শান্ত ও দলনেতা সাকিব।

দুজনে মিলে ৫৪ রানের জুটি গড়েন। এরপর শেন উইলিয়ামসের করা বলে মুজারাবারি হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। ২০ বলে ২৩ রান করে ফেরেন সাকিব।

এরপরে বাংলাদেশের রানের খাতা এগিয়ে নিয়ে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। দলীয় ৯৫ রানে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি পান তিনি।

নাটকীয়তায় মোড়ানো ম্যাচে রোমাঞ্চকর জয় বাংলাদেশের

দীর্ঘ দিন ধরেই প্রচুর সমালোচনার শিকার হচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অবশেষে সে সমালোচনার জবাব দিলেন এই ওপেনার।

সাতটি ৪ ও একটি ছক্কা মেরে ৫৫ বলে ৭১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন শান্ত। দলীয় ১২২ রানে সিকান্দার রাজার বলে ক্রেইগ আরভিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

শেষদিকে আফিফ হোসেন করেন ১৯ বলে ২৯ রান। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫০ রানে।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন মুজারাবানি এবং এনগারাভা। সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই সাকিবদের।

১৫১ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। দলীয় ৩৫ রানের মধ্যেই জিম্বাবুয়ের ৪ উইকেট তুলে নিলেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান। ০.৩ ওভারে দলীয় ৪ রানে ওয়েসলি মাধেভেরেকে ৪(৩) ফেরান তাসকিন। দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে হাসান মাহমুদ দেন ৭ রান। পরের ওভারে তাসকিন এসে আবারও উইকেট তুলে নেন। এবার দলীয় ১৭ রানে জিম্বাবুয়েন অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে ৮(৭) ফেরান তিনি।

৬ নম্বর ওভারে বলে আসেন আরেক পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। মাত্র ১ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট। এর মধ্যে রয়েছে জিম্বাবুয়ের অন্যতম ভরসা সিকান্দার রাজার ০(৩) উইকেট। এর আগে ৫.২ ওভারে মুস্তাফিজ মিল্টন শাম্বার ৮(১৫) উইকেট তুলে নেন।

রাজা আউট হলে উইলিয়ামস এবং চাকাভা মিলে ৩৪ রানের জুটি গড়েন। ১১.২ ওভারে তাসকিন চাকাভাকে আউট করে জুটি ভাঙেন।

এরপরে উইলিয়ামস রায়ান বার্লকে নিয়ে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন। এই জুটিতে আসে ৬৩ রান।

যা জিম্বাবুয়েকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেয়। ৪২ বলে ৬৪ রান করা উইলিয়ামসকে রান আউট করে ফেরান সাকিব।

উইলিয়ামসের আউটের পরে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬ রান। বলে আসেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

প্রথম বলে ১ রান দিয়ে দ্বিতীয় বলে নেন উইকেট। তৃতীয় বলে ৪ ও চতুর্থ বলে ছক্কার পরে ম্যাচ দুলতে থাকে জিম্বাবুয়ের দিকে। দুই বলে দরকার মাত্র ৬ রান।

পঞ্চম বলে সৈকত এনগারাভাকে আউট করলে ম্যাচে জমে ওঠে নাটকীয়তা। শেষ বলে দরকার ৫ রান। সোহান করেন স্টাম্পিং।

জয়ের আনন্দে উল্লাস শুরু করে বাংলাদেশ শিবির। কিন্তু ততক্ষণে খেলার ছিল আরও বাকি।

সোহান শেষ বলটি ধরেছিলেন স্টাম্পের আগে এসে। ফলাফল নো বল। মাঠ ছেড়ে গিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা।

এরপর নো বলের সংকেত আসলে আবার মাঠে নামতে দুদলকে। তবে মাঠে নেমেও শেষে আর সমীকরণ মেলাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫০/৭ (সৌম্য ০, নাজমুল হোসেন শান্ত ৭১, লিটন ১৪, সাকিব ২৩, আফিফ ২৯, ইয়াসির ১*, নুরুল ১, সৈকত ৭; মুজারাবানি ২-০-১৩-২, এনগারাভা ৪-০-২৪-২, চাতারা ৩-০-১৮-০, সিকান্দার রাজা ৪-০-৩৫-১, উইলিয়ামস ২-০-১০-১)

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৪৭/৮ (মাধেভেরে ৪, আরভিন ৮, মিল্টন শাম্বা ৮, উইলিয়ামস ৬৪, রাজা ০, চাকাভা ১৫, রায়ান ২৭ , ইভান্স ২, এনগারভা ৬ ; তাসকিন ৪-১-১৯-৩, মুস্তাফিজ ৪-০-১৫-২ , হাসান ৪-০-৩৬-০ , সাকিব ৪-০-৩৪-০, মোসাদ্দেক ৪-০-৩৪-২ )।

ফল: ৩ রানে জয়ী বাংলাদেশ।

প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: তাসকিন আহমেদ।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর