রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৬ অক্টোবর, ২০২২ ৮:০৯ : অপরাহ্ণ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘সব দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করাই হলো যুক্তরাষ্ট্রের মূল কাজ। যুদ্ধ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সচল নয়। যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে খারাপ অবস্থা চলছে। শক্তিশালী দেশগুলো যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, এতে তাদের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জাতিসংঘের আঙিনায় শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলাম ফোরাম নামক একটি সংগঠন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশকে বিপদে ফেলছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যে জাতিসংঘের সঙ্গে কোনো আলাপ না করেই স্যাংশন বসানো হলো। জাতিসংঘকে উপেক্ষা করে কোনো কোনো দেশ নিজেরাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর কারণে যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের দুর্বলতা রয়েছে। যুদ্ধ থামাতে জাতিসংঘ ব্যর্থ। জাতিসংঘকে শক্তিশালী করতে নিরাপত্তা পরিষদের পুনর্গঠন দরকার। এমনকি সিকিউরিটি কাউন্সিলেও কোনো ডেমোক্রেসি নেই। সিকিউরিটি কাউন্সিলের ৫ স্থায়ী সদস্যের কাছেই সবকিছু। সিকিউরিটি কাউন্সিলেরও সংস্কার প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকেই তারা তাদের মতো সাজিয়ে রেখেছেন। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর নিরাপত্তা পরিষদের সমান সুযোগ থাকা দরকার।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতাদের কাছে সন্ত্রাসীদের অর্থায়নকারী ও অস্ত্র দাতাদের চিহ্নিত করার কথা বলেছেন। কিন্তু সেটি করা হয়নি। কারো সাথে শত্রুতা না করে সবার সাথে বন্ধুত্ব ’, বঙ্গবন্ধুর এই নীতির আলোকেই আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। যখন ইস্টার্ন ও সোভিয়েত ব্লক আমাদের চাইছিল বঙ্গবন্ধু কারো পক্ষ না নিয়ে সবার সাথে সুসম্পর্ক করেন। এটা ছিল অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য।’
গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২০১২ সালে আমরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আমরা তথ্য ও নথিগুলো এখনও পাঠাতে পারিনি। আমাদের এটা দেখে সেই একই সময়ে আলবেনিয়াসহ আরও অনেক রাষ্ট্র তাদের দেশের গণহত্যার বিষয়ে স্বীকৃতি পেতে প্রস্তাব দিয়েছিল। জাতিসংঘ সেখানে থেকে একটি দিবসকে (৯ ডিসেম্বর) গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। আরো আগে পাঠাতে পারলে স্বীকৃতি পেয়ে যেতাম। এটা নিয়ে কাজ চলছে।’
প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. মিল্টন বিশ্বাস, সহ-সভাপতি ড. অধ্যাপক রশিদ আসকারী, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম, দৈনিক বাংলা ও নিউজ বাংলার পরিচালক আজিজুর রহমান প্রমুখ।