প্রতিনিধি, খুলনা প্রকাশের সময় :২২ অক্টোবর, ২০২২ ৭:০৩ : অপরাহ্ণ
খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের চিহ্ন থাকবে না। আওয়ামী লীগ ১০ আসনও পাবে না।’
এ সময় তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘এখনও সময় আছে নিরাপদে সরে যান, না হয় পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।’
আজ শনিবার বিকেলে খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
বক্তব্যের একপর্যায়ে অসুস্থ বোধ করায় চেয়ারে বসে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপক্ষে সরকারের দাবিতে বিভাগীয় পর্যায়ে খুলনায় সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
পদে পদে বাধা, মামলা-হামলাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে খুলনায় বিএনপির এই সমাবেশে জনতার ঢল নামে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিন দিন ধরে সমস্ত কিছু বন্ধ করে দিয়েছে। দুদিন ধরে বাস বন্ধ করে দিয়েছে। নৌপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু এতো কিছুর পরেও গণতন্ত্রের লড়াইয়ের যে সংগ্রাম, তাতে বাধা দিতে পারেনি। প্রশাসনকে ব্যবহার করে জনগণকে দমিয়ে রাখা যায় না। আজকে সেটা আবার প্রমাণ হয়েছে।’
খুলনাবাসীকে অভিবাদন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সভা প্রতীক মাত্র। খালেদা জিয়ার চেয়ার খালি। তিনি গৃহবন্দি। তাঁর স্মরণে এই চেয়ার খালি। জনতার সৈনিক, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে নিয়ে আসো। এই দেশকে নরকে পরিণত করেছে সরকার। সব অর্জন ধ্বংস করে ফেলেছে। অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে এসব করছে সরকার। একবার ভোট ছাড়া, আরেকবার নিশি রাতে। ২০২৩ সালে নির্বাচন একইভাবে করার পায়তারা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন নিজেদের ভালো দেখানোর জন্য কৌশল নিয়েছে। কমিশনকে তো ডিসি-এসপিই মানে না। তাই আমরা নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলছি না। তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। তাই এই সরকারকে বিদায় জানাতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার বলছে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনির কথা। কারণ তারা লুটপাট করছে। সরকার বলছে, সমাবেশে সহায়তার কথা। স্বরাষ্ট্র্রমন্ত্রী কি সহায়তা করেছেন, রেলস্টেশনে গ্রেপ্তার-হামলা করা হয়েছে। আপনারা দমিয়ে রাখতে পারবেন না। বিএনপি নতুন সাহসে বলীয়ান, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের বয়স হয়েছে তারপরও লড়াই করছি। মূল দায়িত্ব তরুণদের উপরে, লড়াইয়ে জিততে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি, সহিসংসতা করছি না। আমাদের উপর হামলা করে পার পাবেন না। বিদেশিরা বুঝে গেছে, আপনারা সন্ত্রাসের দল। হামলা করে ক্ষমতায় টিকে আছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন করতে পারি এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি তাহলে আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন টেকব্যাক বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নিয়ে আসো, কোন বাংলাদেশ? যে বাংলাদেশের জন্য আমরা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম। সমৃদ্ধির বাংলাদেশ, মানবিকতার বাংলাদেশ, মানবাধিকারের বাংলাদেশ, ভালোবাসার বাংলাদেশ। আমরা সেই বাংলাদেশকে ফিরে পেতে চাই।’
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির সমাবেশ শুরু, বাধা পেরিয়ে জনতার ঢল