সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪ | ১৭ আষাঢ়, ১৪৩১ | ২৪ জিলহজ, ১৪৪৫

মূলপাতা বিএনপি

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বেআইনি পদ্ধতিতে ব্যবহার করে আসছে আ.লীগ: ফখরুল


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৭ অক্টোবর, ২০২২ ২:০৪ : অপরাহ্ণ
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় দেড় দশক সময়কাল ধরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে অত্যন্ত বেআইনি ও স্বেচ্ছাচারী পদ্ধতিতে ব্যবহার করে আসছে।’

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন দেশে-বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা র‌্যাব, পুলিশ, ডিবি, বিশেষ শাখা (এসবি), সিআইডি ও ডিজিএফআই দেশের নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বেতারবার্তা ভাইরাল হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকার স্পেশাল ব্রাঞ্চ হেডকোয়ার্টার্সের বরাত দিয়ে রাঙামাটি জেলার পুলিশ সুপার (এসপি-ডিএসবি) গত ২৫ সেপ্টেম্বর বেতারবার্তা নম্বর ৩৯০৯ (রাজনৈতিক) মূলে জেলার সকল থানার ওসিদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের রাঙামাটি জেলার কমপক্ষে ৮ জন শীর্ষ ব্যক্তি, প্রতি উপজেলার শীর্ষ ৫ ব্যক্তি এবং রাঙামাটি জেলার সকল পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের অধীন কমপক্ষে ৫ ব্যক্তি যারা বর্তমান সরকার বিরোধী চলমান গণ-আন্দোলনে “জনবল সংগঠক” বা অর্থায়ন করে কিংবা অন্য কোনোভাবে সহযোগিতা করে এমন ব্যক্তিদের বিস্তারিত তথ্য যেমন ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ও এনআইডি নম্বর ইত্যাদি সংগ্রহ করে তার কাছে প্রথমে ইমেইল যোগে এবং পরে হার্ড কপি পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে। এই বার্তায় ঢাকার স্পেশাল ব্রাঞ্চের মেমো নম্বর ৬১৪(৩৫) তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ এর রেফারেন্স উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ পুলিশের বিশেষ শাখার নির্দেশনা অনুযায়ীই এই বেতারবার্তা পাঠানো হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছে যে, ঢাকার স্পেশাল ব্রাঞ্চের নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশের সকল জেলার পুলিশ সুপার নিজ নিজ এলাকার সকল থানার ওসিকে উপরিউক্ত বেতারবার্তা অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহের জন্য অনুরূপ নির্দেশনা জারি করেছেন যা অত্যন্ত ভয়ংকর, অপ্রত্যাশিত, অসাংবিধানিক, এখতিয়ার বহির্ভূত, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আচরণবিধি পরিপন্থী এবং রাজনৈতিক দল তথা গণমানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও আন্দোলন সমাবেশ করার মৌলিক অধিকার বিরোধী।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উল্লিখিত বেতারবার্তার বিষয়বস্তু থেকে এটি প্রমাণিত হয় যে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমুহহ বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্দেশে একটি নীল নকশার অধীনে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে গুঁড়িয়ে দমন করার জন্য একযোগে কাজ করছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করা, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে এবং এরই মধ্যে গত জুলাই থেকে আমাদের দলের ৫ জন নেতা নিহত হয়েছে (ভোলায় ২ জন, নারায়ণগঞ্জে ১ জন, মুন্সিগঞ্জে ১ জন এবং খুলনায় ১ জন) এবং অসংখ্য নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। দিনে দিনে আন্দোলনের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইতিমধ্যে র‌্যাবের ডিজি, আইজিপি এবং সাবেক সেনাপ্রধানকে বলপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত থাকার জন্য মার্কিন সরকার কর্তৃক নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। বিএনপি মনে করে যে এই সমস্ত নৃশংসতার পিছনে বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসকই মাস্টার মাইন্ড হিসেবে কাজ করছে। এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্দেশ্যমূলক ভাবে উল্টো বিরোধী নেতা-কর্মীদের তথ্য সংগ্রহ করে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টিতে লিপ্ত হয়েছে। এই সমস্ত কাজ শুধু আইনি অধিকারই লঙ্ঘন করে না, নাগরিকদের মৌলিক অধিকারও লঙ্ঘন করেছে।’

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর