নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১০:১৯ : পূর্বাহ্ণ
বিবাহিত ও চাকরিজীবীদের বাদ দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে আবার অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দিয়েছেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা।
আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে অবরোধ শুরু করেন তারা। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরের উদ্দেশে কোনো শিক্ষক বাস ছেড়ে যায়নি। আটকে আছে শাটল ট্রেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী এসে পরিবহন দপ্তরের ফটকে তালা দেন। এ সময় তারা কয়েকটি বাসের চাবিও নিয়ে যান। তাই ক্যাম্পাস থেকে কোনো বাস নগরের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি।
জানা গেছে, ছাত্রলীগের অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের চলমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ভার্সিটি এক্সপ্রেস, বাংলার মুখ, এপিটাফ, রেড সিগন্যাল, কনকর্ড ও উল্কা এই অবরোধের ডাক দিয়েছে। এই উপগ্রুপগুলোর নেতা-কর্মীরা চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
চবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অবরোধের অংশ হিসেবে বাস-শাটল বন্ধ রাখা হয়েছে। নানা তাল বাহানায় আমাদের দাবি নিয়ে প্রহসন করা হচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা এতোদিন কর্মসূচি করেছি। কেন্দ্রীয় নেতারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। তাই আমরা আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ ডেকেছি।’
একই দাবিতে গত ১০ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন, ৮ সেপ্টেম্বর গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, ৬ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন ও ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করেছিলেন।
দীর্ঘ তিন বছর পর গত ৩১ জুলাই রাতে কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত কমিটিতে পদবাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগে তুলে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা ওই দিন রাতে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন।
পরদিন সকালে পদবঞ্চিতদের কমিটিতে স্থান দেওয়াসহ তিন দফা দাবি তুলে আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ স্থগিত করেন বিক্ষোভকারী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রেজাউল হককে সভাপতি ও ইকবাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তিন বছর পর গত ৩১ জুলাই রাতে ৩৭৬ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একপক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী এবং আরেকটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এই দুটি গ্রুপের রয়েছে ১১টি উপগ্রুপ।