রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ৭:৩৩ : অপরাহ্ণ
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘তারা অভিযোগ করেছেন ২০০৯ সাল থেকে নাকি র্যাব কর্তৃক ৬০০ লোক গুম হয়েছে। অথচ আমি র্যাবে ঢুকেছিলাম ২০১৫ সালে। তাহলে আমাকে কেন ওই তালিকায় নেওয়া হয়েছে?’
বৃহস্পতিবার রাতে ‘যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি’র উদ্যোগে নিউইয়র্কের গুলশান ট্যারেসে এক নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে অংশ নিতে আইজিপি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন।
আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র ইউনিটের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ দলটির নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ীসহ বাংলাদেশিরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের পুলিশ কর্মকর্তা ও র্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে তারা স্লোগান দেন।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আজকে আমি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছি, যুক্তরাষ্ট্রের বুকে দাঁড়িয়ে আছি। আমি এই দেশে অনেকবার এসেছি, এখানে লেখাপড়া করেছি, চাকরি করেছি। সেই যুক্তরাষ্ট্র আমাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমাকে তাদের নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আমি পশ্চিমা ভাবধারা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী একজন মানুষ। সেই মূল্যবোধটি হচ্ছে, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ। মানবিকতা ও মানবাধিকারের মূল্যবোধ। আমি তাদের স্বাধীনতায়ও বিশ্বাসী। আমি মানবিকতা ও মানবাধিকারে বিশ্বাস করি, কিন্তু আমার বিরুদ্ধেই এটা হলো।’
আইজিপি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটা কি জানেন? সেটা একটি মজার বিষয়। তারা বলছে, ২০০৯ সাল থেকে নাকি দেশে ৬০০ লোক গুম হয়েছে। র্যাব নাকি গুম করেছে। আমি ভাই ২০০৯ সালে র্যাবে ছিলাম না, ২০১০ সালেও র্যাবে ছিলাম না (হাসতে হাসতে বলেন), আমি ২০১১, ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালেও ছিলাম না। আমি র্যাবে ২০১৫ সালে ছিলাম। যদি আমাকে ৬০০ লোকের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, তাহলে ওই সময় যারা ছিলেন, তাদের কী হবে? বিষয়টা কী এরকম-বেটা তুই করোনি, তোর দাদা করেছে, এই জন্য তুই দায়ী?’’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, তখন আমি আমেরিকায় চাকরি করি। তাহলে তখন তারা আমাকে বের করে দিলো না কেন?’
আইজিপি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তার জন্য আমি মার্কিন প্রশাসন অথবা আমেরিকানদের দোষারোপ করতে চাই না। কারণ, এটা করেছে তারাই, যারা ৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দেয়নি, যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল। ওই গোষ্ঠী বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে চারটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল। সেই ভাড়াটে ফার্ম টানা তিন বছর চেষ্টা করেছে কথিত স্যাংশনের (নিষেধাজ্ঞার) জন্য। এসব বাংলাদেশি অবয়বে বাঙালি হলেও তারা প্রকৃত বাঙালি না। তারা ৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দেয়নি, তারাএকাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল। ‘৬৯-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু দুটি বাদে সব আসন পেলেন, সেবারও ২৮ শতাংশ ভোট দেয়নি। এই ২৮ শতাংশ হলো আর্টিফিসিয়াল বাঙালি।’
প্রসঙ্গত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।