বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা দেশজুড়ে

শিক্ষিকার মৃত্যু: স্বামী মামুনকে কারাগারে পাঠালেন আদালত


আজ দুপুরে মামুন হোসেনকে নাটোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। ইনসেটে কলেজশিক্ষিকা খায়রুন নাহার। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৫ আগস্ট, ২০২২ ৬:৩৫ : অপরাহ্ণ

নাটোরে কলেজশিক্ষিকা খায়রুন নাহারের মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী মামুনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেম উদ্দিনের আদালত এ আদেশ দেন।

গতকাল রোববার সকালে শহরের বলারিপাড়া মহল্লার হাজী নান্নু ম্যানসনের চারতলার ভাড়া বাসা থেকে খায়রুন নাহারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে খায়রুন নাহারের স্বামী মামুন হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ঘটনায় মৃত কলেজশিক্ষিকার চাচাতো ভাই ছবের উদ্দিন বাদি হয়ে গতকাল রাতে সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। তবে মামলায় কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ আজ বেলা সোয়া একটার দিকে মামুন হোসেনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সদর আমলি আদালতে প্রেরণ করেন।

আদালত সূত্র জানায়, আদালতে মামুনের পক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার স্বপন জামিন আবেদন করলে বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

থানায় জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার রাতের বর্ণনা দিয়ে মামুন বলেন, ‘ওকে আমি নিষেধ করছিলাম ওষুধ খাইও না এভাবেই ঘুমাইয়া যাও, ঘুমাতে না পারলে জেগে থাকো। ও আমাকে বলল, আমাকে রিকোয়েস্ট কইরো না টেনশনের কারণে আমি দুইটা ঘুমের ওষুধ খাবই। ওষুধ খেয়ে আমি ঘুমাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ও ওষুধ খেয়ে ঘুমানোর পর আমি নামাজের উদ্দেশে বের হয়েছি। পরে হঠাৎ করে মনে হলো ও আমাকে সাতটার সময় যাওয়ার কথা বলছিল। ও যেহেতু ঘুমের ওষুধ খাইছে ও সাতটার সময় উঠতে পারবে না। তাই আমি রিং দেওয়ার ট্রাই করি। তাহলে ও যাওয়ার সময় আমার জন্য খাবার-দাবার রেডি করে যাবে। ও ওর অফিসে যাবে আমিও আমার কলেজে যাব। আমি বারবার কল দিচ্ছিলাম, কল ঢুকতেছিল কিন্তু রিসিভ করতে ছিল না। তখন একটু ভয় হলো আমার।’

মামুন আরও বলেন, ‘ও (খায়রুন) সবসময় ডিপ্রেশনে থাকতো। আজ ৮ মাস ধরে বিয়ে করসি আমরা, আমি একটা দিনও এসে দেখলাম না যে ওর মুড ভালো। কিন্তু মুড খারাপের একটা দিনেরও কারণ আমি না। তার মুড খারাপ থাকতো কারণ তার আত্মীয়-স্বজন, কলিগরা ফোন দিয়ে বিভিন্ন কথা বলতো এসব কারণে। বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথা তাকে শুনতে হতো। সব পরিচিতরা যখন ব্রেন টর্চার করে তখন একজনের অবস্থা কি রকম হতে পারে সেটা তো সবাই বুঝে।’

এর আগে গতকাল বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে ওই শিক্ষিকার লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ওই দিন রাত আটটার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার খামার নাচকৈড়ের আবুবকর সিদ্দিকী কওমি মাদ্রাসা মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে নাচকৈড় কবরস্থানে খায়রুন নাহারকে দাফন করা হয়।

মৃত খাইরুন নাহার (৪০) গুরুদাসপুর খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। মামুন (২২) নাটোর এনএস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

আরও পড়ুন: শিক্ষিকার মৃত্যু: পোস্টমর্টেম শেষে যা বললেন চিকিৎসক

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর