শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা খেলা

৯ বছর পর ওয়ানডে বাংলাদেশকে হারালো জিম্বাবুয়ে


কাইয়া-রাজার জোড়া সেঞ্চুরির কাছে পরাস্ত হলো তামিম ইকবালরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৫ আগস্ট, ২০২২ ৯:৩১ : অপরাহ্ণ

টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে মূলত সিকান্দর রাজার ব্যাটিং ঝড়ের কাছে পরাস্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ঠিক একই ঘটনা ঘটলো। তিন শতাধিক রানের পাহাড় গড়েও জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটারের জোড়া শতকের কাছে পরাস্ত হলো তামিম ইকবালরা।

ফলে ওয়ানডে সিরিজেও শুরুতে পিছিয়ে পড়লো বাংলাদেশ।

আজ শুক্রবার জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস পার্কে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম,লিটন, এনামুল ও মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩০৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ৩০৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১০ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৩৫ রান করেন সিকান্দর রাজা। এর আগে ১১০ রান করে সাজঘরে ফিরেন ইনোসেন্ট কাইয়া। রাজার অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ১০ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ ২০১৩ সালে ওয়ানডে ম্যাচ জিতেছিল জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। দীর্ঘ এ সময়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে ফরম্যাটে ১৯ বার মুখোমুখি হলেও কোনো জয় পায়নি জিম্বাবুয়ে।

তবে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর এবার ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও জয় তুলে নিলো তারা।

বাংলাদেশের দেয়া ৩০৪ রানের লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে প্রথম দুই ওভারে দুই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

৯ বছর পর ওয়ানডে বাংলাদেশকে হারালো জিম্বাবুয়ে

তৃতীয় উইকেটে ইনোসেন্ট কাইয়া ও ওয়েসলি মাধভেরে শুরুর ধাক্কা সামালের চেষ্টা চালান।

জুটিতে ৬০ রান করার পর রান আউটের শিকার হয়ে মাধভেরে আউট হয়ে ফেরেন। তখন জিম্বাবুয়ের দলীয় সংগ্রহ ৬২ রান।

চতুর্থ উইকেটে কাইয়া ও সিকান্দার রাজা রেকর্ড ১৯২ রানের জুটি গড়েন। উভয়েই সেঞ্চুরি তুলে নেন।

জয় থেকে অর্ধশত রান দূরে থাকতে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া ইনোসেন্ট কাইয়া ১২২ বলে ১১ চার ও ২ ছয়ে ১১০ রান করে মোসাদ্দেকের শিকারে পরিণত হন।

কিন্তু অপরপ্রান্তে অভিজ্ঞ সিকান্দার রাজা অপরাজিত সেঞ্চুরি করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি করা রাজা ১০৯ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় ১৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে দারুণ পারফর্ম করে বাংলাদেশ। ২৫ ওভার পর্যন্ত কোনো উইকেটই হারায়নি টাইগাররা।

দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস মিলে শুরুটা সাবধানী করেন, এরপর ধীরে ধীরে হাত খুলে খেলেন। এর মধ্যেই লিটনকে সঙ্গে নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান তামিম।

তামিম ৭টি চারের পর ৭৯ বলে ওয়ানডেতে নিজের ৫৪তম ফিফটির স্বাদ পান। এরপর যখন ৫৭ রানে পৌঁছান, তখন নিজের অর্জনটাকে আরো সমৃদ্ধ করেন তামিম। এতোদিন বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৭ হাজার রানের ক্লাবের সদস্য ছিলেন তিনি। এবার নিজেকে ছাড়িয়ে তামিম পৌঁছালেন ৮ হাজারি ক্লাবে।

বিশ্বের ৩৪তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৮ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন এই টাইগার ড্যাশিং ওপেনার।

২৬তম ওভারে এসে ওপেনিং জুটি ভাঙে জিম্বাবুয়ে। এই ওভারে রাজার বলে হুক করতে গিয়ে কাইয়ার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৮৮ বলে ৬২ রান করে বিদায় নেন তামিম।

এরপর লিটনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিন বছর পর ওয়ানডে একাদশে ফেরা এনামুল হক বিজয়। এই জুটি গড়ার পথে ব্যক্তিগত অর্ধশতক স্পর্শ করেন লিটন দাস। এনামুলের সঙ্গে ৫২ রানের জুটি উপহার দেন লিটন। অবশ্য এই জুটি আরো বড় হতে পারতো।

ব্যাটিং চলাকালীন পেশিতে টান পড়ে লিটনের। সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি। স্ট্রেচারে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ড্রেসিংরুমে। দুর্দান্ত খেলতে থাকা লিটন ৮৯ বলে ৮১ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হন। তার ইনিংসে ছিল ৯টি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা।

লিটন ফিরলেও অবশ্য বিপদ বাড়েনি বাংলাদেশের। উইকেটে থাকা এনামুল মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে গড়েন আরেকটি জুটি। এই জুটি গড়ার পথেই ৪৭ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন ওয়ানতে তিন বছর পর ফেরা এনামুল।

মুশফিকের জুটি শক্ত জুটি গড়ে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন এনামুল। শেষ পর্যন্ত ৭৩ রান করেন তিনি। ৬২ বলে তার ইনিংসে ছিল ৬টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কা। তার সঙ্গে ৪৯ বলে ৫২ রান করেন মুশফিকুর রহিম। আর শেষ দিকে নেমে ১২ বলে ২০ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।

জিম্বাবুয়ের হয়ে উইকেট দুটি নিয়েছেন ভিক্টর নায়োচি ও সিকান্দার রাজা।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর