নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২ আগস্ট, ২০২২ ২:২৭ : অপরাহ্ণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার কৃষক লীগের একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘বিএনপি নেতাদের হাতে হারিকেনই ধরিয়ে দিতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতির এ বক্তব্যের একদিন পর পাল্টা জবাব দিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বললেন, ‘বর্তমান সরকারের হাতে হারিকেন দেওয়ার সময় এসে গেছে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ভোলায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি যৌথভাবে এই সমাবেশের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে পালিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী পালাতে পারেননি। বিশ্বের সব স্বৈরাচারীদের এমন পরিণতি হয়। স্বৈরাচার পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু জনগণ পালাতে দেয় না।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের হাতে হারিকেনই ধরিয়ে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফিলিস্তিনে যেমন মায়ের বুক খালি হলে মা বুক চাপড়ায়, গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের চিত্র এমন। আমি যখন আব্দুর রহিমের নিথর দেহ দেখলাম, তখন তার মা বুক চাপড়াচ্ছে। ফিলিস্তিনের মায়েরাও এমন করে।’
সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা হরতাল ও অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি দাবি করলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগে রাজপথ দখল করতে হবে। হরতালের আগে রাস্তা দখল করতে হবে। দখলকারী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে জনগণের সরকার গঠন করতে হবে।’
দলীয় নেতাকর্মীদের গর্জে ওঠার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সবাইকে গর্জে উঠতে হবে, রাজপথ দখলে নিতে হবে। এই সরকারকে আর সময় দেওয়া যাবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার মতো মেগা প্রকল্পে মেগা ঋণ নিয়ে বড় দুর্নীতি করছে। আজকে যে পরিমাণ ডলার লাগে আগামী দুই বছর পর এর তিনগুণ ডলার লাগবে। এভাবে নতুন প্রজন্মের বড় ক্ষতি করেছে সরকার। আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতির শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ অবস্থায় চলে গেছে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘চলতি বছর এই সরকারের শেষ বছর। এরপরের সরকার হবে বিএনপি সরকার। এরপরের প্রধানমন্ত্রী হবেন বেগম খালেদা জিয়া অথবা তারেক রহমান।’
তিনি বলেন, ‘রহিম হত্যার মধ্য দিয়ে এই সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। আপনারা অনেকেই বলেন হরতাল-অবরোধ দেয় না কেন? হরতাল অবরোধ দেবো, এমনকি এই সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। আপনারা রাজি আছেন? এসময় উপস্থিত সব নেতাকর্মীরা হ্যাঁ সূচক শব্দ উচ্চারণ করেন।’
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, বর্তমান সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ বক্তৃতা করেন।