রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২ আগস্ট, ২০২২ ৮:৩৭ : অপরাহ্ণ
টানা ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া বাংলাদেশকে জাগিয়ে তুলতে তারুণ্য নির্ভর দল পাঠিয়েছিল জিম্বাবুয়েতে। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের লজ্জায় ডুবেছে বাংলাদেশ।
প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে দু’দলই একটি করে জয় পাওয়ায় তিন ম্যাচ সিরিজে চলছিল সমতা। সিরিজের ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে শেষ টি-টোয়েন্টিতে এসে। এই ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছে ১০ রানে হেরে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে লাল-সবুজের দল।
আজ মঙ্গলবার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ের নেমে জিম্বাবুয়ে শুরুতে হোঁচট খেলেও রায়ান বার্লের ঝড়ো ফিফটিতে ২০ ওভারে ১৫৬ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। ১৫৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৪৭ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
১৫৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না বাংলাদেশের জন্য। মুনিম শাহরিয়ারের বদলি হিসেবে নামা পারভেজ হোসেন ইমন নিজের অভিষেক ম্যাচে ছিলেন নিষ্প্রভ। প্রথম দুই ম্যাচে ভালো শুরু পাওয়া লিটন কুমার দাস ৬ বলে ১৩ রান করে ছিলেন নিজের ছায়ায়।
প্রথম দুই ম্যাচে সমালোচিত ব্যাটিং করা এনামুল হক বিজয় এদিনও বের হতে পারেননি নিজের ছায়া থেকে। ১৩ বলে ১৪ রান করে আউট হন তিনি।
৩৪ রানে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশকে পথের দিশা দেখানোর দায়িত্বটা নিজেদের কাঁধে তুলে নেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নাজমুল হাসান শান্ত।
দায়িত্ব নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখলেও রানরেট হু হু করে বাড়তেই থাকে। তাই দায়িত্ব পালনের ব্যর্থ হয়েই ২০ বলে ১৬ রান করে ফেরেন শান্ত। আফিফও সঙ্গ দিতে শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। তবে আফিফের চেষ্টা বারবারই ঢাকা পড়েছে ‘বিশ্রাম’ ফেরত রিয়াদের কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে।
দলীয় ৯৯ রানে ব্যক্তিগত ২৭ বলে ২৭ রান করে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পরের বলেই ফেরেন অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পাওয়া মোসাদ্দেক হোসেন। দুইজনকেই প্যাভিলিয়নে ফেরান পেসার ব্রাড ইভান্স।
টানা দুই উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ যখন খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে তখনই টাইগারদের জয়ের বন্দরে নোঙর করার দায়িত্ব নেন মাহেদি হাসান ও আফিফ হোসেন ধ্রুব।
১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে ১৭ বলে ২২ রান করে ফেরেন মাহেদি। দলকে জয় থেকে ২৪ রান দূরে রেখেই ফেরেন তিনি।
পরে একা আফিফ দলকে আর টানতে পারেননি। তার ২৭ বলে ৩৯ রান সত্ত্বেও বাংলাদেশের হার ১০ রানের।
জিম্বাবুয়ে সফরের আগে বিসিবি জানিয়েছিল, এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে দলের সঠিক কম্বিনেশন খুঁজে নিতেই তরুণদের উপর ভরসা রাখছে। তবে সেই ভরসার সামান্যতম প্রতিদানও মেলেনি বাংলাদেশের পারফর্মেন্স। প্রথম ম্যাচে বাজে বোলিংয়ের পর শেষ টি-টোয়েন্টিতেও দেখা মিলেছে বাজে ব্যাটিংয়ের। এতেই সিরিজ হার নিশ্চিত হয় টি-টোয়েন্টি দলের।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের শুরুটা ভালো হয়নি। আগের দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৬৫ ও ৬২ রান করা সিকান্দার রাজা এদিন গোল্ডেন ডাকের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছিলেন।
ইনিংসে নিজের প্রথম ওভারে ৬ রান দিয়ে ওপেনার রেগিস চাকাভাকে ফেরানো নাসুম নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে নিজের খেই হারিয়ে ফেলেন। তার এক ওভারে ৩৪ রান নিয়ে বাংলাদেশকে এলোমেলো করে দেয় জিম্বাবুয়ে।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে নাসুম আহমেদের বলে ৫ ছক্কা ও এক চার হাঁকিয়ে স্কোরবোর্ডে বড় সংগ্রহ যোগ করেন রায়ান বার্ল।
৬৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা জিম্বাবুয়ের হাল ধরেন রায়ান বার্ল ও লুক জোঙ্গে। দু’জনের ৩১ বলে ৭৯ রানের জুটিতে ভর করেই শতরানের কোটা স্পর্শ করে স্বাগতিকরা। শুধু শতরান না, লড়াইয়ের পুঁজিটাও আসে তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই।
উনিশতম ওভারের প্রথম বলে লুকি জঙ্গি ও শেষ বলে রায়ার্ন বার্লকে সাজঘরে ফেরান হাসান মাহমুদ।
শেষ পর্যন্ত ১৫৬ রানে থামে জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
বাংলাদেশ দলের হয়ে ৪ ওভারে ২২ করে রান দিয়ে একটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ ও মোসাদ্দেক। শেখ মেহেদি ও হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ২৮ করে রান দিয়ে নেন দুটি করে উইকেট। মাহমুদউল্লাহ ২ ওভারে ৮ রানে নেন এক উইকেট। নিয়মিত স্পিনার নাসুম ২ ওভারে ৪০ রান হজম করেন।