শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

শ্রীলংকান জাহাজে স্যুটকেস, রাজাপাকসের দেশ ছাড়ার গুঞ্জন (ভিডিও)


শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১০ জুলাই, ২০২২ ৯:১৪ : পূর্বাহ্ণ

ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের সরকারি বাসভবন ছেড়ে পালানোর পর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, নৌবাহিনীর দুটি জাহাজে কয়েকটি বড় স্যুটকেস তোলা হচ্ছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের দাবি, জাহাজে তোলা স্যুটকেসগুলো প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের। ভিডিওতে তিন ব্যক্তিকে স্যুটকেসগুলো তাড়াহুড়ো করে এসএলএনএস গজবাহু নামের একটি জাহাজে তুলতে দেখা যায়। এ সময় তারা দৌড়াচ্ছিলেন।

কলম্বো বন্দরের হারবার মাস্টার নিউজওয়ান টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছেন, একদল ব্যক্তি এসএলএনএস সিন্দুরালা এবং এসএলএনএস গজবাহুতে চড়ে বন্দর ত্যাগ করেছেন। তবে তাদের পরিচয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য তিনি দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

কলম্বোতে বিক্ষুব্ধ জনগণ সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেওয়ার পরপরই শুক্রবার রাতে বাসভবন ছেড়ে সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে আশ্রয় নেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।

এর আগে শ্রীলঙ্কার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেশটির প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি গাড়িবহর পৌঁছানোর খবর দিয়েছে। দৃশ্যত গাড়িবহরটি দেশের প্রেসিডেন্টের। তবে তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেনি চ্যানেলগুলো।

শ্রীলংকার একটি শীর্ষ সরকারি সূত্র ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছে, গত রাতে (শুক্রবার) রাষ্ট্রপতি রাজাপাকশেকে সেনা সদর দফতরে স্থানান্তর করা হয়েছে।

তবে দেশটির বেসরকারি সম্প্রচারকারী গণমাধ্যমগুলোর দাবি, শ্রীলংকার প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাজাপাকশের একটি গাড়ি বহর দেখা গেছে। তবে তিনি দ্বীপরাষ্ট্র ছেড়েছেন কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।

সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত গোটাবায়া রাজাপাকসের বর্তমান অবস্থান অজানা এবং বিক্ষোভকারীরা এখন তার অফিস এবং সরকারি বাসভবন উভয়ই দখল করে রেখেছে।

বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে পড়ার পর বিক্ষোভকারীরা গোতাবায়ার বিলাসবহুল কক্ষ, রান্নাঘর এবং অন্যান্য স্থানে হানা দেয়। এ সময় অনেককে প্রেসিডেন্টের বিছানায় শুয়ে, বসে, দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে দেখা যায়। রান্নাঘরে ঢুকে সেখানকার খাবার খেতেও দেখা যায় তাদের। গোটাবায়ায় সুইমিংপুলে ঝাপাঝাপি করতেও দেখা গেছে তাদের।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দু’জন বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের কক্ষের একটি রেফ্রিজারেটর থেকে মদের বোতল বের করে তা পান করছেন। অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, একদল বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটছেন, সেলফি তুলছেন এবং ভিডিও ধারণ করছেন।

প্রসঙ্গত, শ্রীলংকা ২২ মিলিয়ন জনসংখ্যার একটি দেশ। দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয় তাদের অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দেওয়ার পর৷

মূলত: বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র ঘাটতির কারণে পঙ্গু হয়ে গেছে দেশটি। প্রয়োজনীয় জ্বালানী আমদানি করতে ব্যর্থ হয় দেশটির সরকার। খাদ্য সামগ্রীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো জনগণের ধরা-ছোঁয়ায় বাইরে এখন।

জ্বালানির অভাবে পড়া মানুষ এখন অধৈর্যশীল হয়ে পড়েছে। তারা এখন চায় ক্লিন ইমেজের মানুষ তাদের দেশ চালাবে। এমন কাউকে পাওয়ার আগ পর্যন্ত এমন দুরঅবস্থা হয়ত চলতে থাকবে।

সূত্র : এনডিটিভি।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর