রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩ জুলাই, ২০২২ ৭:৩৭ : অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখতে চান পশ্চিমা ১৪ দেশের রাষ্ট্রদূত। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তারা এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
আজ রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়ালসহ ইসি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে প্রতিনিধি দলের পক্ষে এ কথা বলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথাল চুয়ারড।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয় ইউনিয়নের হাইকমিশনের নেতৃত্বে অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টভুক্ত (ওইসিডি) ১৪টি দেশের রাষ্ট্রদূত এ বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে নাথাল চুয়ারড বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিতসহ গণতন্ত্র আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করতে অংশগ্রহণমূলক ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করতে আমাদের দেশ বাংলাদেশের ইসিকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।’
সুইজারল্যান্ডের এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিতে সহায়ক অবস্থা তৈরি করতে এবং সকল অংশীজনের যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমাদের দেশগুলো নির্বাচন কমিশনকে যেকোনো প্রকার সহযোগিতাও দিতে প্রস্তুত।’
তিনি জানান, গণতান্ত্রিক ধারাকে আরও শাণিত করার মধ্য দিয়ে নাগরিকদের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে সহায়তা করতে চায় ওইসিডি সদস্য দেশগুলো।
ওইএসডি মূলত আন্তঃসরকারি সংস্থা। বিশ্বের ৩৮টি দেশ এই সংস্থার সদস্য হলেও সভায় ১৫টি দেশের প্রতিনিধির আসার কথা ছিল। তবে অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার জেরেমি ব্রুর আসেননি।
বৈঠক শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়াল বলেন, ‘ওনারা এসেছেন এটা একটা ট্রেডিশন। আগেও এসেছেন তারই ধাবাবাহিকতা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আইন-কানুন, আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।’
সিইসি বলেন, ‘আমরা আমাদের কার্যক্রমগুলো ওনাদের জানিয়েছি। উনারা সাধারণত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর জোর দিয়ে থাকেন। সেজন্যই উনারা ভোট যদি ইনক্লুসিভ, একসেপ্টবল, ফ্রি এবং ফেয়ার হয়, তাহলে উনারাও খুশি হবেন, পুরো দেশবাসী খুশি হবেন এই আশাবাদ উনারা ব্যক্ত করেছেন।’
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দুরত্বের বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না সাংবাদিকদের প্রশ্নে কাজী হাবিবুল আওয়াল বলেন, ‘এ বিষয়ে উনারা তেমন কিছু বলেনি। উনারাও খুব ভালো করেই জানেন, এখনও কিছু কিছু দল ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। উনারাও বিশ্বাস করেন, আমরাও চেষ্টা করে যাব, যেন ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়।’
নির্বাচন কমিশন কূটনীতিকদের কাছে কোনো সহায়তা চেয়েছে কি না- প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘ওনারা বলেছে সহযোগিতা করার কথা। আমরা বলেছি আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দেখব। কোনো ট্যাকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আমরা উনাদের জানাবো।’
বৈঠকে কূটনীতিকরা নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে কথা বলেছেন জানিয়ে কাজী হাবিবুল আওয়াল বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমাদের এদিক থেকে কোনো বাধা নেই। তবে এ বিষয়ে ডিপ্লোমেটিকলি আলোচনা করে দেখতে পারেন। ফরেন ওবজারভারদের বিষয়ে আপনারা ফরেন মিনিস্ট্রিতে একটু কথা বলে দেখতে পারেন।’
রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে বৈঠকে ছিলেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস, কানাডার হাইকমিশনার লিলিও নিকোলস, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ফ্রান্সের সহকারী রাষ্ট্রদূত গুইলাম অড্রেন ডি কেরড্রেল, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আছিম ট্রস্টার, ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকোনুনজিয়াটা, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত এনি গিয়ার্ড ভ্যান লিউয়েন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন, স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো ডি আসিস বেনিটেজ সালাস, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তোরান ও জাপানের হেড অব মিশন ইয়ামায়া হিরোয়ুকি।