রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩০ জুন, ২০২২ ১:০৬ : অপরাহ্ণ
ব্রিটিশ নাগরিক আদম মুহাম্মদ (৫২)। হজ পালনের তীব্র আকাঙ্ক্ষায় অসাধ্য সাধন করেছেন তিনি। হজ পালনের জন্য ব্রিটেন থেকে দীর্ঘ ১১ মাস পায়ে হেঁটে সৌদি আরবের মক্কায় পৌঁছেছেন তিনি।
সৌদি আরবে প্রবেশের আগে নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, চেক, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, তুরস্ক, সিরিয়া, জর্দানসহ মোট ৯টি দেশ পাড়ি দেন আদম মুহাম্মদ।
২০২১ সালের ১ আগস্ট আদম মুহাম্মদ হজ পালনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।
সাড়ে ৬ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গত রোববার মক্কার আয়েশা (রা.) মসজিদে এসে পৌঁছান তিনি।
এ সময় স্থানীয়দের উষ্ণ অভ্যর্থনা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন ইরাকি বংশোদ্ভূত হজযাত্রী আদম মুহাম্মদ। মক্কায় তাকে অভ্যর্থনা দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়।
সৌদি সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।
সৌদি সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়াকে আদম মুহাম্মদ বলেন, ‘২৫ বছর ধরে আমি যুক্তরাজ্যে বসবাস করছি। করোনা মহামারি রোধে তখন চারদিকে সবার চলাচল বন্ধ ছিল। তখন আমি পবিত্র কোরআন অর্থসহকারে পড়ে ব্যস্ত সময় পার করি। দেড় বছর গভীরভাবে কোরআন পাঠে মনোনিবেশ করি আমি। এরপর একদিন ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর আমার মধ্যে অন্য রকম অনুভূতি তৈরি হয়। তখন আমার মনে হলো, কেউ যেন আমাকে বলছে ‘তুমি হেঁটে মক্কায় গমন করো।’
এরপর তিনি মাত্র দুই মাসে দীর্ঘ ভ্রমণের প্রস্তুতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। অবশ্য এই সময় একটি ব্রিটিশ সংস্থা তাকে নানাভাবে সাহায্য করে। এই ভ্রমণে তিনি বৈরী আবহাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়লেও কারো বড় ধরনের বাধার মুখোমুখি হননি। নতুন কোনো দেশে প্রবেশ করলে পুলিশ তাকে নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে ভ্রমণকালে কারো কাছে সহযোগিতা না চাইলেও অসংখ্য মানুষ তার সাহায্যে এগিয়ে এসেছে।
রেকর্ড ভাঙা বা অন্য কোনো ধরনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তার নেই বলে জানান আদম মুহাম্মদ।
মক্কায় পৌঁছে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমার দীর্ঘ হজ ভ্রমণের একমাত্র উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। হজ পালন আমার জীবনের বড় ও প্রিয় আকাঙ্ক্ষা ছিল। এ বছর তা পূরণ হচ্ছে বলে আমি খুবই আনন্দিত। ’
সৌদিতে প্রবেশের পরই স্থানীয়দের ভালোবাসা ও অভ্যর্থনা পেয়ে অভিভূত হন তিনি। সবার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
আদম মুহাম্মদ এই দীর্ঘ ভ্রমণের নাম দিয়েছেন, ‘দ্য পিস জার্নি’ বা শান্তিভ্রমণ। দীর্ঘ ভ্রমণে তার সঙ্গী ছিল প্রায় আড়াই শ কেজি ওজনের তিন চাকার ট্রলি। এখানেই তিনি বিশ্রাম নিতেন এবং প্রয়োজনীয় সব জিনিস রাখতেন। দীর্ঘ হজ ভ্রমণের বেশির ভাগ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে সম্প্রচার করতেন। ‘পিস জার্নি ফ্রম দ্য ইউকে টু মক্কা’ নামে তার ভিডিওগুলো সামাজিক মাধ্যমে সাড়া জাগিয়েছে।
