নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৪ জুন, ২০২২ ১০:১৫ : পূর্বাহ্ণ
দেশব্যাপী করোনা টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ সপ্তাহ শুরু হয়েছে আজ শনিবার। যাদের করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার চার মাস পূর্ণ হয়েছে, তাদেরকে এই বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।
সারাদেশের নির্ধারিত করোনার টিকা কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ের কেন্দ্রগুলোতেও এই টিকা দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, টিকা গ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তির বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। বুস্টার ডোজ নেওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে এসএমএস আসার প্রয়োজন হবে না। তবে করোনার টিকা কার্ড সঙ্গে না থাকলে টিকা নেওয়া যাবে না।
উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে বুস্টার ডোজ হিসেবে মডার্না বা অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা দেওয়া হবে। সিটি করপোরেশনের আওতাধীন যেসব টিকা কেন্দ্রে ফাইজার টিকা দেওয়া হয়, সেসব কেন্দ্রে বুস্টার হিসেবে ফাইজার ও যেসব কেন্দ্রে ফাইজার দেওয়া হয় না, সেসব কেন্দ্রে মডার্না বা অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা দেওয়া হবে।
বুস্টার ডোজ সপ্তাহ চলবে ১০ জুন পর্যন্ত। এই সময় এক কোটিরও বেশি মানুষকে টিকার বুস্টার ডোজ দেয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনতে এর আগে বিভিন্ন সময় দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। বুস্টার ডোজ নিয়ে এবারই প্রথম কর্মসূচি নিয়েছে সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে ১৬ হাজার ১৮১ টিকা কেন্দ্রে বুস্টার ডোজ দেয়া হবে। এর মধ্যে স্থায়ী কেন্দ্র ৬২৩টি ও অস্থায়ী কেন্দ্র ১৫ হাজার ৫৫৮টি। বুস্টার ডোজ সপ্তাহ চলাকালে একযোগে ৪৫ হাজার ৫৩৫ জন টিকাদান কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী টিকাদান কাজে নিয়োজিত থাকবেন। স্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে ৭ দিন ও অস্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে ২ দিন টিকাদান কার্যক্রম চলবে। অস্থায়ী কেন্দ্রে টিকা দেয়ার তারিখ স্থানীয় পর্যায়ে প্রচার-প্রচারণা ও মাইকিং করে জানিয়ে দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী এ পর্যন্ত এক কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার মানুষকে করোনার টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশের ৯ শতাংশ মানুষ বুস্টার ডোজ পেয়েছেন। এ সপ্তাহে আরও এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হলে তৃতীয় ডোজের ক্ষেত্রেও বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ করোনার প্রায় ৩০ কোটি টিকা সংগ্রহ করেছে। এর বড় অংশ সরাসরি কেনা, একটি অংশ বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে কেনা, কিছু টিকা কোভ্যাক্সের মাধ্যমে অনুদান পাওয়া আবার কিছু টিকা উপহার পাওয়া।
টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ ভারতকে পেছনে ফেলেছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশের মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়। ইতিমধ্যে ১২ কোটি ৮৭ লাখ মানুষ বা মোট জনসংখ্যার ৭৬ শতাংশ প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন ১১ কোটি ৭৭ লাখ মানুষ বা মোট জনসংখ্যার ৬৯ শতাংশ।