সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ফোনেই বরখাস্ত হয় টিটিই শফিকুল


রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তার মনি ও টিটিই শফিকুল ইসলাম

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৮ মে, ২০২২ ১২:৩৮ : পূর্বাহ্ণ

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী শাম্মী আক্তার মনির ফোনেই মূলত ট্রেনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়।

মন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোন ইয়াসমিন আক্তার নিপা এ কথা জানিয়েছেন।

নিপা হচ্ছেন বিনা টিকিটে এসি কেবিনে ওঠে মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেয়া সেই তিন যাত্রীর একজন ইমরুল কায়েস প্রান্তের মা।

রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারের নানার বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদীতে। প্রান্তের মা নিপা ঈশ্বরদী পৌর সদরের নুরমহল্লা কর্মকারপাড়ার বাসিন্দা। দুই বোন এবার একসঙ্গে একই বাড়িতে ঈদ উদযাপন করেছেন বলেও জানা গেছে।

শনিবার স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের ইয়াসমিন আক্তার নিপা বলেন, ছেলেদের সঙ্গে ‘অসদাচরণ’ করার কারণে টিটিইকে তিনি বদলি করতে মন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারকে বলেছিলেন। তখন শাম্মী তাকে জানান, বদলি নয়, বরখাস্তই করে দিচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন করে বরখাস্ত করতে বলেন।

জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয় দেয়া তিন যাত্রী। তারা হলেন- মন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোনের ছেলে ইমরুল কায়েস প্রান্ত ও তার চাচাত ভাই ওমর ও হাসান। টিকিট না থাকলেও এই তিনজন খুলনা থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে যাওয়া সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এসি কেবিনের আসন দখল করেন। তখন টিটিই শফিকুল ইসলাম তাদের কেবিন থেকে বের করে শোভন বগিতে পাঠান এবং ৩৫০ টাকা করে জরিমানা করেন। এরপরই ট্রেন ঢাকায় পৌঁছার আগেই মধ্যপথে ভোররাতে টিটিইকে সাময়িক বরখাস্ত করে মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেয়া হয়।

আরও পড়ুন: বিনা টিকিটে ভ্রমণ করা যাত্রীরা রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর আত্মীয়

প্রান্তের মা ইয়াসমিন আক্তার নিপা বলেন, ছেলের সঙ্গে টিটিই অসদাচরণ করলে ফোন করে তা আমাকে জানায়। ওইদিন রাতে আমি আর আমার ফুফাতো বোন শাম্মী এক ঘরে ঘুমিয়েছিলাম। ছেলের সঙ্গে টিটিইর আচরণের বিষয়টি শাম্মীকে জানাই। আমার ছেলের কাছেও বিস্তারিত ঘটনা তিনি শোনেন। তখন আমরা টিটিইকে বদলি করে দিতে বলি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেলের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাকে ফোন করে ওই টিটিইকে বরখাস্ত করতে বলেন। এরপরই টিটিই বরখাস্ত হন।

তিনি আরও বলেন, রেলমন্ত্রী ফোন করে শুক্রবারের রাতের ওই ঘটনার বিষয়ে আমার কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। শনিবার বিকেলে প্রান্তকে রাজধানীর রেলভবনে ডাকা হয়। সেখানে সে বিস্তারিত জানিয়েছে।

নিপা আরও বলেন, আমার ছেলে ও তার দুই চাচাতো ভাই টিকিট কেটেই ট্রেনে ওঠেছিল। ট্রেনের এসি কেবিনের সিট ফাঁকা থাকায় গার্ডের অনুরোধে সেখানে গিয়ে বসে। তখন টিটিই শফিকুল ইসলাম এসে টিকিট দেখতে চান। এসি কেবিনের টিকেট না পেয়ে টিটিই তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এরপর তারা নিজেদের রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেয়। তখন টিটিই আরও ক্ষেপে যান। বলেন, ‘ট্রেন কি আপনাদের বাবার’। আবার যদি ধরেন আমরা রেলমন্ত্রীর কেউ না। কিন্তু আমার ছেলে তো বৈধভাবেই টিকিট কেটেই ট্রেনে উঠেছে। তবে কেন ওই টিটিই এই ব্যবহারটা করলেন।

ইয়াসমিন আক্তার নিপা বলেন, ঘটনার পরপরই যদি টিটিই শফিকুল ফোন করে বলতো যে, তার ভুল হয়ে গেছে। বুঝতে পারিনি। সরি-টরি বললে বিষয়টা ঠিক হয়ে যেতো। কিন্তু তিনি তা না করে বিষয়টিকে ভাইরাল করে দিয়েছেন পুরো বাংলাদেশে।

আরও পড়ুন: রেলমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান টিআইবির

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর