রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৭ মে, ২০২২ ৬:০৯ : অপরাহ্ণ
বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণের দায়ে রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর তিন আত্মীয়কে জরিমানা করায় রেলের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে বরখাস্তের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
একই সঙ্গে এ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনকে সাময়িক পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
আজ শনিবার টিআইবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে পাবনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে বিনা টিকিটে ট্রেনের এসি কামরায় বসে ভ্রমণ করছিলেন তিন যাত্রী। তাদের কাছ থেকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করেছিলেন টিটিই শফিকুল ইসলাম। এর আগে তারা (যাত্রী) রেলমন্ত্রীর আত্মীয় বলে পরিচয় দেন। এ ঘটনায় শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্তের ঘটনাকে ‘ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত’ বলে উল্লেখ করে টিআইবি বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ন্যায়নিষ্ঠভাবে দায়িত্বপালনের কারণে পুরস্কার পাওয়ার বদলে টিটিইকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
একই সঙ্গে এটিকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের’ একটি ‘নির্লজ্জ ও নিকৃষ্টতম’ উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের সূত্রধরে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি নির্লজ্জ ও নিকৃষ্টতম উদাহরণ। এখানে মূলত দুইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে, প্রথমত রেলমন্ত্রীর নিকটাত্মীয়দের বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ অর্থাৎ তারা ধরেই নিয়েছিলেন যে, রেলের প্রচলিত আইন তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়! দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট টিকিট পরিদর্শক তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করায়, তাকে কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করেই তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল ফোনে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, পুরস্কৃত হওয়ার পরিবর্তে বরখাস্ত হবার ঘটনা- দেশবাসীর কাছে এই বার্তাটিই পৌঁছেছে যে, ক্ষমতার দাপট ও অনিয়মই হচ্ছে বাস্তবতা। তাছাড়া, এই নিকৃষ্টতম দৃষ্টান্ত এখনও গুটিকয়েক যারা নিষ্ঠা ও সততার সাথে স্ব স্ব ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের জন্য একটি শক্তিশালী নেতিবাচক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে।
কয়েকটি প্রশ্ন তুলে টিআইবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিনা টিকিটের যাত্রীরা টিটিইকে রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় কেন দিয়েছিলেন? তাদের সত্যিকার পরিচয় রেল কর্তৃপক্ষ যাচাই করেছিল কি না? যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগের জেরে টিটিইর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রেলমন্ত্রীর পরিচয় কতটা প্রভাব বিস্তার করেছিল? এসব বিষয় পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন।