নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :২৩ এপ্রিল, ২০২২ ৬:৪০ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম নগরীতে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে ইসরাফিল খসরু। এতোদিন উচ্চশিক্ষিত এই তরুণ নগরীতে নীরবে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের এক ইফতার অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান ইসরাফিল খসরু।
দলীয় কোনো কর্মসূচিতে প্রথমবারের মতো তিনি অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবক দলের এই কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে অংশ নেওয়ার পর নগরীতে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে উচ্চশিক্ষিত ও স্মার্ট ইসরাফিল খসরুকে নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
দলীয় সূত্রের খবর, গত ১ বছর ধরে চট্টগ্রাম-১১ (ডবলমুরিং-বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে নীরবে রাজনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছেন ইসরাফিল খসরু। এই আসনে ছাত্রদলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে খসরুপুত্র ইসরাফিলের বেশ প্রভাব রয়েছে। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগযোগ রাখছেন তিনি।
বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে ইসরাফিল খসরু রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের আমন্ত্রণে আমি ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। আমি চট্টগ্রামের একটা রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমাদের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। সে হিসাবে দায়বদ্ধতা থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংযোগ রাখা আমাদের দায়িত্ব।’
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার বিষয়ে আমি আপাততে কোনো চিন্তা করিনি। এটা পরে চিন্তা করে দেখবো।’
জানা গেছে, ইসরাফিল খসরু ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ব্যাচেলর অব সায়েন্স (বিএসসি) অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের বিএনপির এক সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজনীতি সংবাদকে জানান, ইসরাফিল খসরু গত এক বছর ধরে ডবলমুরিং-বন্দর-পতেঙ্গা আসনে নীরবে কাজ করে আসছেন। ওই এলাকায় তিনি একটা অবস্থান তৈরি করছেন।
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে ইসরাফিল খসরু চট্টগ্রাম-১১ আসনে আমীর খসরুর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছিলেন। তখন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নজর কাড়েন তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির রাজনীতিতে এখন তরুণদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে দলটির হাইকমান্ড।
নগর বিএনপি নেতাদের অনেকে মনে করছেন, আমীর খসরু যেহেতু দলের কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন তাই হয়তো ছেলেকে আপাততে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করবেন না। সে হিসাবে নগর বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারেন ইসরাফিল।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের বিএনপি নেতারা বলছেন, ইসরাফিল খসরু ধীরে ধীরে রাজনীতির লাইমলাইটে আসছেন। তিনি সামনে নগর বিএনপির কমিটিতে স্থান পেতে পারেন।
আমীর খসরুর মতো স্বচ্ছ ও ক্লিন ইমেজ ভাবমূর্তির মুখ হিসেবে পরিচিতি ইসরাফিল খসরুর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার বিষয়টা ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন নগর বিএনপি নেতারা।
নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘আমীর খসরুর বাবাও রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। ফলে পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্যের কারণে ইসরাফিল খসরু রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতেই পারেন। রাজনীতির প্লাটফর্ম সবার জন্য উন্মুক্ত। ইসরাফিল খসরু রাজনীতিতে সক্রিয় হলে আমরা তাকে স্বাগত জানাবো।’
নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘তিনি (ইসরাফিল খসরু) রাজনীতিতে আসলে সবাই জানতে পারবেন।’
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর কাট্টলীর বাসিন্দা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বাবা মাহমুদুন্নবী চৌধুরী ১৯৫৪ সালের পূর্ব পাকিস্তানের আইনপরিষদ নির্বাচনে ডবলমুরিং-সীতাকুন্ড আসন থেকে জয়লাভ করেন। তিনি যুক্তফ্রন্ট সরকারের প্রথমে গণযোগাযোগ মন্ত্রী ও পরে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী ছিলেন। ভোটের রাজনীতিতে ‘সিদ্ধহস্ত’ আমীর খসরু ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাহাড়তলী-ডবলমুরিং আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।