রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৫ এপ্রিল, ২০২২ ১১:১৭ : পূর্বাহ্ণ
বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। অন্যদিকে বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
ওয়াশিংটনে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে সোমবার স্থানীয় সময় দুপুরে (বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত) অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তাদের মধ্যে এই আলোচনা হয়।
নির্ধারিত সময়েই ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র দপ্তরে শুরু হয় বৈঠক। ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা চলে দুই দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে।
বৈঠক শেষে হোটেলে ফিরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন তার সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মন্ত্রীর সফরসঙ্গী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ওই ভিডিও ব্রিফিংটি গণমাধ্যমে শেয়ার করেন।
র্যাব হয়তো কখনো কখনো ‘অতিরিক্ত বা বেশি কিছু করে’ ফেলেছে-এমন বক্তব্য বৈঠকে দেওয়ার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তবে ইনবিল্ট সিস্টেম আছে জবাবদিহির এবং অনেকের শাস্তি হয়েছে। এমনকি লাইফ একজিকিউশনও হয়েছে। সুতরাং এখানে জবাবদিহি আছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন জবাবে কী বলেছেন, সে বিষয়ে ধারণা দিয়ে মোমেন বলেন, “উনি বললেন যে, ‘এটার প্রসেস আছে, সেই প্রসেসে হবে। তবে আমাদের জবাবদিহি দরকার। আমরা এ ব্যাপারে বেশ সোচ্চার’।”
গত চার মাসে বাংলাদেশে কোনো বিচারবহির্ভুত হত্যা না হওয়ার বিষয়ে ব্লিনকেন অবহিত জানিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, “আমি তাকে এ-ও বলেছি যে গত চার মাসে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অধীনে একটি মামলাও হয়নি। উনি বললেন, ‘এটা ভালো’।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, র্যাবের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের মধ্যে যারা অপরাধে অভিযুক্ত তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
মোমেন বলেন, তাদের বিচারে দেশে যে ম্যাকানিজম রয়েছে, সে সম্পর্কে জানিয়েছি। তাদের ১২ জন বা তার বেশি সদস্যের মৃত্যুদণ্ড হওয়ার বিষয়েও বলেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা ওদের প্রসেস আছে। এটা আমাদের কমপ্লিট করতে হবে। এই দেশে প্রায় জিনিসেরই দেয়ার আর মেনি প্রসেসেস… ওই কমিটির ওই লোকগুলোকে সন্তুষ্ট করতে হবে… এটাতে সময় লাগবে। সুইচের মতো না যে একদিনে অন আর অফ করতে পারবে।’
বাংলাদেশে অনেক কিছু সহজে করা গেলেও যুক্তরাষ্ট্রে সেভাবে করা যায় না মন্তব্য করে মোমেন বলেন, ‘আমাদের দেশের সরকার ইয়েস বললে ইয়েস হয়ে গেলো। এখানে অনেক সময় চাইলেও পারে না।’
উল্লেখ্য, ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক, বর্তমান পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমদসহ বাহিনীর সাত কর্মকর্তার ওপর গত বছর ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়।
এদিকে ভয়েস অব আমেরিকা জানায়, বৈঠকের শুরুতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, ‘বিগত ৫০ বছরের স্মৃতি মনে করলেও, আমরা আসলে আগামী ৫০ বছরের সূচনার কথা চিন্তা করছি।’ দুই দেশের মধ্যকার অংশীদারত্ব জোরদার করার বিষয়ে কাজ করার ক্ষেত্রেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।