রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৩১ মার্চ, ২০২২ ৯:৫১ : অপরাহ্ণ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ‘যখনই আমি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি, তখন থেকে সব সময়ই বলেছি, আমি কারো কাছে আমার মাথা নত করবো না। জাতিকেও মাথা নত করতে দেবো না। এর অর্থ আমার জাতিকে কারো দাস হতে দেবো না। এই অবস্থান থেকে কখনো আমি সরে যাইনি।’
বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে সৃষ্ট অনিশ্চয়তার মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
ইমরান খান বলেন, ‘আমাদের সামনে এখন দুটি পথ আছে। তার আগে আমি আপনাদের বলতে চাই, কেন আমার মতো একজন মানুষ রাজনীতিতে এসেছে। আল্লাহ আমাকে সব দিয়েছেন। খ্যাতি দিয়েছেন। অর্থ দিয়েছেন। তাই আমি নিজেকে সৌভাগ্যভান মনে করি। একটি স্বাধীন দেশে জন্মগ্রহণকারী প্রথম প্রজন্মের মানুষ আমি।’
তিনি বলেন, ‘আমার থেকে পাকিস্তানের বয়স ৫ বছর বেশি। দাসত্বের সময়কালে জন্মেছিলেন আমার পিতা-মাতা। তারা আমাকে বুঝতে শিখিয়েছিলেন যে, একটি স্বাধীন দেশে জন্মাতে পেরেছি, এ জন্য আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি।’
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একটি সিদ্ধান্তে এসেছি যে-আল্লামা ইকবাল যেমন স্বপ্ন দেখেছিলেন, কায়েদে আযম ভগ্ন স্বাস্থ্য নিয়ে যে দেশের জন্য লড়াই করেছিলেন, সেই পাকিস্তান কখনো কারও দাস হবে না। পাকিস্তান রাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্যই ছিল একটি ইসলামিক কল্যাণময় রাষ্ট্র হবে, যেমনটা দেখা যায় মদিনায়।’
ইমরান খান বলেন, ‘যখন আমি রাজনীতি শুরু করি, আমার ম্যানিফেস্টোতে তিনটি জিনিস যুক্ত করেছিলাম। তা হলো-ন্যায়বিচার। যার অর্থ হলো শক্তিধর এবং দুর্বল সবার জন্য একই আইন কার্যকর থাকবে। থাকবে মানবতা। কারণ, একটি ইসলামিক রাষ্ট্রে থাকবে দয়া, সহানুভূতি। তৃতীয়ত থাকবে খুদ্দারি। কারণ, মুসলিম জাতি কোনো দাস হতে পারে না।’
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহ যদি আমার প্রতি সন্তুষ্ট না থাকতেন তাহলে আমি রাজনীতিতে প্রবেশ করতে পারতাম না। আমি ১৪ বছর চেষ্টা করেছি। লোকজন বার বার আমার কাছে জানতে চেয়েছেন কেন রাজনীতিতে এলাম? আমি একটি আদর্শের কারণে রাজনীতিতে এসেছি।’
ইমরান খান বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার পররাষ্ট্রনীতি হবে স্বাধীন। এটা হবে পাকিস্তানের জন্য। এর অর্থ এই নয় যে, আমরা শত্রুতা চাই। যখন আমি সরকার পেয়ে বলেছি, আমাদের পক্ষে যাবে না এমন কোনো পররাষ্ট্রনীতি আমাদের হবে না।’
‘থ্রেট লেটার’ বা হুমকি দেওয়া চিঠির প্রসঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আজ আপনাদের সামনে। এর কারণ হলো ৭ ও ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র, নট ইউএস থেকে আমরা একটি বার্তা পেয়েছি। একটি মুক্ত দেশের একজন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই বার্তাকে শুধু প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দেখা ঠিক হবে না। একই সঙ্গে এই বার্তা এই দেশটিরও বিরুদ্ধে।’