রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারের বিরুদ্ধে দেওয়া বক্তব্য আক্রমণাত্মক: বিপিএসএ


আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৩০ মার্চ, ২০২২ ৯:০৪ : অপরাহ্ণ

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি দলের মহাসচিবসহ দায়িত্বশীল নেতারা আপত্তিকর, আক্রমণাত্মক, বিভ্রান্তিকর ও বিব্রতকর বক্তব্য দিচ্ছেন উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ)।

আজ বুধবার বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, এমন বক্তব্য পরিকল্পিত, অশোভনীয় ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

অতীতের বিভিন্ন সময়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালনকারী একটি দলের নেতাদের মুখে পুলিশের মতো পেশাদার বাহিনী সম্পর্কে এই ধরনের হুমকি প্রদানপূর্বক বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত ও অনভিপ্রেত। ভবিষ্যতে তারা এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকবেন-এটাই বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন প্রত্যাশা করে।

উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং তার ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান তারেক রহমানকে শিশু মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে বক্তব্য দিচ্ছেন দলটির নেতারা।

এ নিয়ে ২৬ মার্চ রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মিলনায়তনে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে কথা বলেছিলেন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছিলেন, ‘যাকে তার স্বামী পরিত্যাগ করছিল…যে পাকিস্তানের ওখানে কী করছে…। আর এখন সে নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা।’

আরও পড়ুন: ওই কমিশনার কথা বলার শিষ্টাচারও জানেন না: মির্জা ফখরুল

একই অনুষ্ঠানে বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে পুলিশের আইজি বেনজীর আহমেদ বলেছিলেন, ‘তারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। দেশের অর্থনীতির ওপর অবরোধ আরোপ করতে একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা লবিস্ট নিয়োগ করছেন, জিএসপি বন্ধ করতে চিঠি লিখেছেন।’

এরপর পুলিশের এই দুই কর্মকর্তার তীব্র সমালোচনা করে চলেছেন বিএনপি মহাসচিবসহ দলটির নেতারা।

পুলিশ কর্মকর্তাদের সংগঠন বিপিএসএ-এর বিবৃতিতে বলা হয়, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনায় আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্যে নয় বরং বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং মুক্তিযুদ্ধের সত্য ও সঠিক ইতিহাসের আলোকে বক্তব্য প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশ সর্বদা রাষ্ট্রের কল্যাণে ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানসহ স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে। দেশের শান্তিপ্রিয় ও উন্নয়নকামী জনগণ পুলিশের পাশে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ তাদের এ ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে আইনসঙ্গত সব কাজে পুলিশের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন বজায় রাখবে বলে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি পুলিশ সদস্যরা প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের সূচনা করেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেন এবং ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের উত্তরাধিকারী বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা সেবার সুমহান ব্রত নিয়ে সর্বোচ্চ পেশাদারির সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। জঙ্গিবাদ দমনসহ দেশের প্রতিটি সংকটে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্ভীক পুলিশ সদস্যরা দেশপ্রেমের দৃপ্ত শপথে বলীয়ান হয়ে কাজ করছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ পেশাদারি ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর