নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :২৭ মার্চ, ২০২২ ১০:১৮ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বিএনপির কাছে প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘যদি ধরে নেওয়া যায় জিয়াউর রহমান ২৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তাহলে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ২৬ মার্চই রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপন করেছিলো। আজ কেন বিএনপি ২৭ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের নাটক সাজাতে চায়?’
আজ রোববার সকালে নগরীর কালুরঘাট বাংলাদেশ বেতারের ট্রান্সমিশন সম্প্রচার কেন্দ্রের সামনে অনুষ্ঠিত গণজমায়েত কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
‘ইতিহাস বিকৃতকারী ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির ঘৃণ্য অপচেষ্টার প্রতিবাদে’ এ কর্মসূচির আয়োজন করে নগর আওয়ামী লীগ।
জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দাবি করেননি উল্লেখ করে আ জ ম নাছির বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেছিলেন। ছাব্বিশে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণাটি প্রথম পাঠ করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এমএ হান্নান। এ ঘোষণাটি পাঠের পর তখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেয় যে, প্রতিরোধ যুদ্ধরত কোনো সামরিক কর্মকর্তার মাধ্যমে ঘোষণাটি পাঠ হলে জাতি উজ্জীবিত হবে, তাই প্রতিরোধ যুদ্ধের রণাঙ্গন থেকে পলাতক মেজর জিয়াকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের করলডেঙ্গা পাহাড় থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ কালুরঘাটে নিয়ে আসেন এবং স্বাধীনতার ঘোষণাটি তার দ্বারা পাঠ করানো হয়। আসলে এটাই ছিল প্রতিরোধ যুদ্ধের একটি রণ কৌশল। এটাই ইতিহাসের প্রকৃত সত্য।’
বিএনপির কোনো রাজনীতি নেই উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটির সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘রাজনীতিবিহীন এই দলটির জন্ম হয়েছিল ক্যান্টনমেন্টে। সামরিক উর্দি পরা কিছু সামরিক কর্মকর্তার ইন্দনে এবং জিয়ার রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপতৎপরতায় বিএনপি জন্মগ্রহণ করেছে। দলটির জন্মই আজন্মের পাপ। তাই মিথ্যাচার ও ইতিহাস বিকৃতি তাদের একমাত্র অবলম্বন, যা ভয়ানক অপরাধও।’
আ জ ম নাছির বলেন, ‘বিএনপি জামায়াত এদেশকে ২১ বছর পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করেছিল। তারা আবারও এদেশেকে পাকিস্তান বানানোর জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। এদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নেই, এমনকি বাঙালির প্রতি সামান্য মমত্ব ও দরদ নেই। তাই এদের নির্মূল না করা পর্যন্ত স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিরাপদ নয় এবং বার বার আঘাত আসবে।’
এই আওয়ামী লীগ নেতা হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘যারা ইতিহাস বিকৃত করার সামান্যতম চেষ্টা চালাবে এদের মাঠে-ঘাটে-রাস্তায় এমনকি অলিতে-গলিতেও প্রতিহত করা হবে। এই লক্ষ্যে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলবে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে রাজনৈতিক শক্তি।’
সভাপতির বক্তব্যে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণার সবুজ সংকেত দিয়ে বলেছিলেন, আমি হুকুম দিবার নাও পারি তাহলেও যার যা কিছু আছে তা-ই দিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সেই ঘোষণা অনুযায়ী আমজনতা স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছিল। এটাই হচ্ছে ঐতিহাসিক সত্য। এই সত্যকে যারা বিশ্বাস করে না তারা প্রকৃত অর্থেই স্বাধীনতার শত্রু।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার বিরোধীদের দুঃসাহস সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছে, তাই আজ তাদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। তাদের বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধের তাগিদ সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।’
নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদের সঞ্চালনায় গণজমায়েতে বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, উপদেষ্টা সফর আলী।
সমাবেশে উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে নগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, জেলার ডেপুটি কমান্ডার গোলাম সরওয়ার দুলু, ডেপুটি কমান্ডার সৈয়দ আহমদ, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, দফতর সম্পাদক হাসান মাহমুদ শমসের, আইন বিষয়ক সম্পাদক শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. হোসেন, মহিলা সম্পাদিকা জোবাইদা নার্গিস খান, ধর্ম সম্পাদক জহুর আহমদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু তাহের, নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আমিনুল হক, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, ড. নেছার উদ্দীন আহমেদ মঞ্জু, বেলাল আহমেদ, থানা আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম কায়সার, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আতিকুর রহমান, অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান, সৈয়দ মো. জাকারিয়া, রুহুল আমিন মুন্সী, মো. ইয়াকুব, নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, জসীম উদ্দীন, আব্দুল মালেক, খালেদ হায়াত খান মাসুক।