শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ৯ জিলকদ, ১৪৪৫

মূলপাতা আঞ্চলিক রাজনীতি

‘ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের অনেক ক্ষতি করেছেন’, ফুঁসলেন এমপি একরাম


প্রতিনিধি, নোয়াখালী প্রকাশের সময় :১০ মার্চ, ২০২২ ৩:১১ : অপরাহ্ণ
ওবায়দুল কাদের ও একরামুল করিম চৌধুরী
Rajnitisangbad Facebook Page

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।

তিনি আক্রমণ করে বলেন, ‘কাদের সাহেব আপনাকে আমি ঘৃণা জানাই। আপনি আওয়ামী লীগের অনেক ক্ষতি করেছেন। আপনি নোয়াখালীর মানুষের কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত লোক।’

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর থেকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে একরামুল করিম চৌধুরী এ বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।

তবে কিছুক্ষণ পর তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভ ভিডিওটি সরিয়ে নেন। কিন্তু এর আগে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে নিয়ে তার বড় ভাই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে এমপি একরাম বলেন, ‘আপনি আপনার ভাইকে (কাদের মির্জা) লেলিয়ে দিয়েছেন। আপনার ভাইকে থামান, না হলে একদিনের জন্য আমার হাতে দিন, পিচঢালা রাস্তায় তাকে ছেচিয়ে নেবো।’

১৮ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই লাইভে কাদের মির্জাকে প্রশ্ন করে একরামুল করিম বলেন, ‘আপনি যে আজ সাধু সাজেন, আপনি আমার কাছ থেকে কত কোটি টাকা নিয়েছেন? কোম্পানিগঞ্জের মানুষ সারাজীবন আপনাকে ঘৃণা করবেন।’

নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদেরকে কটাক্ষ করে একরামুল করিম বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের বাবা রাজাকার, তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে। আপনি রাজাকারের বংশধর।’

একরামুল করিম বলেন, ‘আমি ওবায়দুল কাদের সাহেবের বিরুদ্ধে ভোট করেছিলাম। প্রচুর ভোট পেয়েছিলাম। নেত্রী আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে দলে টেনে নিয়েছেন। ২০০৮ সালে এসে আমাকে আবার সদর আসনে মনোনয়ন দিয়েছেন। সে নির্বাচনে মালেক উকিল সাহেবের পরিবার মেজর মান্নানের ভোট করেছিলেন।’

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম বলেন, ‘প্রিয় নোয়াখালীবাসী আমাকে চিনতে পেরেছেন কি না জানি না। আমার নাম একরাম চৌধুরী। তিনবারের এমপি। সদর- সুবর্ণচরের আপনাদের আদরের চৌধুরী। আমার হার্টে ৫ বার রিং বসিয়েছি। অনেক চেষ্টা করেছি আপনাদেরকে ভালোবাসা দিতে। আজ লাইভে আসার কারণ হলো নোয়াখালী বিএনপির ঘাঁটি ছিল। দীর্ঘ ২০ বছর পরিশ্রম করে এটাকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বানিয়েছি।’

জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমকে ‘জালিমের চেয়েও খারাপ’ বলে আখ্যা দিয়ে একরামুল করিম বলেন, ‘তিনি বিগত ২০ বছর ধরে চরবাটায় দুঃশাসন করেছেন। তিনি দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদের ভাইকে ভুল বুঝিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হয়েছেন। কিন্তু সেটা বন্ধ করা আমার জন্য মিনিটের ব্যাপার ছিল মাত্র। কিন্তু আমি তা করিনি। ওবায়দুল কাদের সাহেব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার সুবিধার জন্য।’

নোয়াখালীবাসীর উদ্দেশে একরাম বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সেলিম থেকে আপনারা সাবধান। বিগত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দলের নেতাদের কাছে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। বিভিন্ন খাত থেকে পারাসেন্টেজ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন পারসেন্টেজ নিয়েছি এগুলোতে আপনারই আমাকে এনে দিয়েছেন এবং চাকরির জন্য তদবির করেছেন। আমি আমার ব্যবসায়িক টাকা দিয়ে রাজনীতি করি।’

একরামুল করিম বলেন, ‘আমি অনেক কষ্ট করে জেলা আওয়ামী লীগের অফিস করেছি। আজকে আওয়ামী লীগের অফিস থেকে আমার ছবি ফেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি ইচ্ছে করলেই আপনাদেরকে আওয়ামী লীগ অফিসে ঢুকতে নাও দিতে পারতাম। কিন্তু আমি সেটা করিনি। ছবি ফেলে দিয়ে কী হবে? মানুষের হৃদয় থেকে তো মুছতে পারবেন না।’

https://youtu.be/co_P_SfV2g4

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর