ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার কারণে প্রায় ১৬ হাজার প্রবাসী ভারতীয় নাগরিক দেশটিতে আটকা পড়েছেন, যার মধ্যে আছেন অনেক শিক্ষার্থীও।
ভারতীয় শিক্ষার্থীরা চলমান পরিস্থিতিতে ইউক্রেন থেকে ফিরতে চাইলেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।
এরই মধ্যে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় শিক্ষার্থীরা সে দেশের সেনা ও নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে তুমুল হেনস্থা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
পোল্যান্ড ও ইউক্রেনের সীমান্তে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সীমান্ত পেরোতে না দিয়ে মারধর করার একটি ভিডিও সামনে এসেছে।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী সেই ভিডিওটি গতকাল সোমবার সকালে টুইটারে শেয়ার করেছেন। তিনি এ বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছেন।
My heart goes out to the Indian students suffering such violence and their family watching these videos. No parent should go through this.
GOI must urgently share the detailed evacuation plan with those stranded as well as their families.
We can’t abandon our own people. pic.twitter.com/MVzOPWIm8D
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) February 28, 2022
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে প্রচণ্ড ঠান্ডা ও লড়াইয়ের মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও স্লোভাকিয়া সীমান্তের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের মধ্যে রয়েছেন বহু ভারতীয়। অভিযোগ, ইউক্রেনীয়দের সহজেই সীমান্ত পার হতে দেয়া হলেও বেছে বেছে ভারতীয়দেরই আটকে দিচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা।
খবরে বলা হয়, যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন আগেও ইউক্রেনে ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ হাজার। এদের অনেকেই আবার ডাক্তারি পড়ুয়া। তবে রাশিয়া পূর্ণ যুদ্ধ ঘোষণা করার আগেই দেশে ফেরেন অন্তত হাজার চারেক ভারতীয়। তারপরই যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফেরাতে ‘অপারেশন গঙ্গা’ শুরু করে মোদি সরকার। যেহেতু ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধ তাই প্রতিবেশী রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও স্লোভাকিয়া হয়ে ভারতীয়দের ফেরানোর কাজ চলছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতীয় অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, আতঙ্ক ছড়াতে বার বার শূন্যে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরেও ভিসার লাইন থেকে টেনে টেনে ভারতীয়দের বের করার অভিযোগও রয়েছে। এমনকি ভারতীয়দের জমায়েত লক্ষ্য করে গাড়ি ছুটিয়ে এগিয়ে আসার অভিযোগও উঠেছে সেনাদের বিরুদ্ধে। মারধর এবং লাথি মারার ঘটনাও নাকি ঘটেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, জাতিসংঘে ভারতের অবস্থানের জন্যই ক্ষুব্ধ কিয়েভ। ফলস্বরূপ ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে সেদেশে থাকা ভারতীয়দের।
গত শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পেশ করে আমেরিকা। সেই প্রস্তাবে ভোট না দিয়ে কার্যত রাশিয়ার পাশেই দাঁড়ায় ভারত।