রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ৪:০৯ : অপরাহ্ণ
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৩০০ রুশ সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
ওই পোস্টে বলা হয়, গত ৫ দিনের সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত রুশ বাহিনীর ১৯১টি ট্যাংক, ২৯টি যুদ্ধবিমান, ২৯টি হেলিকপ্টার ও ৮১৬টি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে ইউক্রেনের সেনা বাহিনী।
যদিও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বিবিসি, তবে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশ্বাস, অভিযানের প্রাথমিক পর্যায়ে ইউক্রেনের তুলনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাশিয়া।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বিবিসি।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রুশ বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্বীকারও করেছেন, তবে নিহত সেনাদের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি তারা।
এদিকে সোমবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত ৫ দিনের হামলায় ইউক্রেনে এ পর্যন্ত ৯৪ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
আরও পড়ুন: পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ পুতিনের
আজ সোমবার সকাল থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভজুড়ে শোনা যায় সাইরেন।
শহরের বিপুল মানুষ ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ড বা বেজমেন্টে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া গতকাল রাতভর শহরে শোনা গেছে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ।
ইউক্রেনের সেনারা বলছেন, সবদিক থেকেই লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলা ছুড়ছে রুশ বাহিনী।
যুদ্ধ থেকে বাঁচতে লাখ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছাড়ছে। শরণার্থীর সংখ্যা তিন লাখ ৬৮ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে।
এর মধ্যেই ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকালে প্রথম বারের মতো রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা শর্তহীন আলোচনায় যোগ দেবেন।
তবে আগামী ২৪ ঘণ্টাকে যুদ্ধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
অন্যদিকে, রুশ বাহিনী বলছে, তারা ইউক্রেনের ১৪টি সামরিক বিমানঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এ ছাড়া ধ্বংস করা হয়েছে ১৯টি সামরিক কমান্ড পোস্ট, ২৪টি এস-৩০০ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং ৪৮টি রাডার স্টেশন।
এ ছাড়া ইউক্রেনের নৌবাহিনীর আটটি জাহাজে আঘাত হেনেছে রুশ বাহিনী। সব মিলিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে ৮০০ সামরিক স্থাপনা।
দীর্ঘ দুই মাস ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় ২ লাখ সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে দেশটির পূর্বাঞ্চলে সেনা অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন ভ্লাদিমির পুতিন।
তার ভাষণ সম্প্রচারের পরপরই রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায় এবং তড়িৎগতিতে ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পাশপাশি তিন দিক থেকে দেশটির ভেতরে প্রবেশ করতে শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী।
ইতোমধ্যে ইউক্রেনের কয়েকটি শহর রুশ বাহিনীর দখলে চলে গেছে।
আরও পড়ুন: তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা করছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট