রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:০১ : পূর্বাহ্ণ
আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন এবং এদিনই ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইন’স ডে।
ফাগুন হাওয়ায় এবার রঙ জুড়েছে ভালোবাসাও।
তাই বসন্ত উৎসব আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস মিলেমিশে একাকার।
প্রচলিত বাংলা বর্ষপঞ্জি সংস্কার করে ত্রুটিমুক্ত ও বিজ্ঞানসম্মত করে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির সঙ্গে সমন্বয় করেছে বাংলা একাডেমির পঞ্জিকা সংস্কার কমিটি।
এর ফলে এ বছর থেকে পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে পড়ছে।
ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিতে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেছে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষদ।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চে বাসন্তী সাজে নানা আয়োজন উপভোগের মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্যাপন করছে সব বয়সী মানুষজন।
মহামারির কারণে এ বছর সীমিত পরিসরে পালন করা হচ্ছে বসন্ত উৎসব। প্রকৃতির সঙ্গে মন রাঙাতে ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে বসন্ত বরণে মেতেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।
ফাল্গুনের প্রথম দিনকে বাংলাদেশে পহেলা ফাল্গুন ও বসন্ত বরণ উৎসব হিসেবে উদ্যাপন করা হয়, যা ১৯৯১ সালে সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজন করে।
শীতের রুক্ষতাকে পেছনে ফেলে প্রকৃতিকে আবার নতুন রূপে সাজিয়ে তোলার আগমনী বার্তা নিয়ে আসে বসন্ত।
গাছে গাছে নতুন পাতা গজায়। আমের মুকুল আসে। পাখি গান গায়। আর, বাতাসে ভাসে মিষ্টি ফুলের ঘ্রাণ।
প্রজাপতিরা রঙিন ডানা মেলে জানায় ঋতুরাজের আগমনী বার্তা। বসন্ত শুধু প্রকৃতিতেই নয় মানুষের মনেও জাগায় প্রাণের ছোঁয়া।
তাই বসন্তের প্রথম দিনটিকে উদযাপন করতে সবাই মেতে ওঠে উৎসবে। নিজেকে সাজিয়ে তোলে বসন্তের রঙে।
ফাল্গুন নামটি এসেছে মূলত ফাল্গুনী নামের নক্ষত্র থেকে। খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ সালের দিকে চন্দ্রবর্ষ ও সৌরবর্ষ উভয়ই মেনে চলা হতো।
ফাল্গুন ছিল পূর্ণ চন্দ্রের মাস। ১৯৫০-১৯৬০ দশকেই আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা ফাল্গুন পালন শুরু হয়।
সে সময় বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের সংস্কৃতি থেকে নিজেদের আলাদা করতে রবীন্দ্রসংগীত শোনার পাশাপাশি বাঙালি নিয়মে পহেলা ফাল্গুন পালন শুরু করে।
বসন্ত নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক গান, অনেক কবিতা। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ভাষায় ‘ফুল ফুটুক, আর না-ই ফুটুক, আজ বসন্ত’।
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের বসন্ত নিয়ে জনপ্রিয় একটি গান হচ্ছে ‘বসন্ত বাতাসে সই গো, বসন্ত বাতাসে, বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে, সই গো, বসন্ত বাতাসে’।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসন্ত নিয়ে লিখেছেন অনেক কবিতা ও গান।
পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত যেমন আমাদের সাংস্কৃতিক অনুসঙ্গ, তেমনি এ মাসের রাজনৈতিক গুরুত্বও অসীম।
ফাগুনে শিমুল আর কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙ মনে করিয়ে দেয় বায়ান্নর ফাগুনের শহীদদের কথা। মনে করিয়ে দেয় ভাষা শহীদের রক্তের ইতিহাস।
এ মাসেই মায়ের ভাষা বাংলা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিলেন রফিক, সফিক বরকত, সালামেরা।
তাদের রক্তের সোপান বেয়ে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। তাই ফাগুন বাঙালির দ্রোহেরও মাস।