নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ৩:৩১ : অপরাহ্ণ
পাঁচ বছর মেয়াদের শেষ দিনে ব্রিফিং করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
তবে বরাবরের মতোই উল্টো পথে হেঁটেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহববু তালুকদার।
সিইসির ব্রিফিংয়ে উপস্থিত না হয়ে পৃথকভাবে নিজ কক্ষে ব্রিফিং করেছেন তিনি।
ব্রিফিংয়ে মাহববু তালুকদার বলেছেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, ওই নির্বাচনে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের লাশ পড়ে আছে। এই লাশ সৎকারের দায়িত্ব কে নেবে?’
কথাটা রূপকার্থে বলার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটাই সত্য। নির্বাচনের নামে সারা দেশে এমন অরাজকতা কখনো কাঙ্ক্ষিত ছিল না।’
আজ সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২১৩ কেন্দ্রে শতভাগ ভোট অস্বাভাবিক: নূরুল হুদা
মাহববু তালুকদার প্রশ্ন রাখেন, ‘আইন প্রণেতারা ভবিষ্যতে আইন-ব্যবসায়ী হয়ে যাবেন না তো?’
ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনের দুর্বলতা নিয়েও কথা বলেন মাহবুব তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘বিদায়কালে আত্মবিশ্লেষণের তাগিদে বলি, নির্বাচন কমিশনের বড় দুর্বলতা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব, জালিয়াতি ইত্যাদি সম্পর্কে ভুক্তভোগীরা যেসব অভিযোগ করেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দৃষ্টান্ত বিরল। লিখিতভাবে যেসব অভিযোগ পাঠানো হয়, তারও যথাযথ নিষ্পত্তি হয় না। অধিকাংশ অভিযোগই আমলে না নিয়ে নথিভুক্ত করা হয় বা অনেক ক্ষেত্রে নথিতেও তার ঠাঁই হয় না।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে গত ৫ বছরে যা কিছু বলেছি, তাতে কোনো ফলোদয় হয়েছে বলে মনে হয় না। আগেও বলেছি, নির্বাচন কমিশন গঠন আইন বাধ্যতামূলক। তবে আইনটি সব রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য না হলে সংকটের সমাধান হবে না। এখন পর্যন্ত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণের কোনো পূর্বাভাস দেখা যাচ্ছে না। এতে সংকট আরও ঘনীভূত হবে। আশাবাদী মানুষ হিসেবে আমি সব সংকটের সমাধান দেখতে চাই।’
বাংলাদেশের মানবাধিকার সম্পর্কে কথা বলা অমূলক উল্লেখ করে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘মানবাধিকার নেই, মানবিক মর্যাদা নেই। গণতন্ত্র না থাকলে এসব থাকে না। বিশ্বে সম্মানজনক রাষ্ট্র হিসেবে আসীন হতে হলে গণতন্ত্রের শর্তসমূহ অবশ্যই পূরণ করতে হবে’-বলেন মাহবুব তালুকদার।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘ভোটাধিকার ও মানবাধিকার একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। গণতন্ত্রের আকাঙ্খা থেকে এর উৎপত্তি। বর্তমান অবস্থায় উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। আইন প্রণেতাগণ আইন প্রণয়নের চেয়ে উন্নয়নেই বেশি আগ্রহী। কিন্তু উন্নয়ন কখনও গণতন্ত্রের বিকল্প ব্যবস্থা নয়।’